দুলুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলো সিংড়া বিএনপি

সিংড়া প্রতিনিধি:

নাটোরের সিংড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগ এনে রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে সিংড়া উপজেলা, পৌর বিএনপি ও এর সকল অঙ্গ সংগঠন। বুধবার বেলা ১২টার দিকে সিংড়া শহরের গোডাউনপাড়া এলাকায় পৌর বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয়া হয়।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর হস্তক্ষেপ এবং সিংড়া পৌর বিএনপির সভাপতি দাউদার মাহমুদকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।

এসময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান মুন্টু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল ফটিক, উপজেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম আনু, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তাইজুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি মহিদুল ইসলাম, থানা বিএনপি সহ-সভাপতি শাহাদৎ হোসেন, মহিলা দলের সভানেত্রী ডেইজি আহমেদসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দাউদার মাহমুদকে সিংড়া পৌর বিএনপির সভাপতি করার পর থেকে তিনি আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে চলেছেন। তিনি পৌর বিএনপির সভাপতি হওয়ার পর থেকে দলে বিভক্তি সৃষ্টি করে আসছেন। এই অবস্থায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশের অযুহাত দেখিয়ে দাউদার মাহমুদকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সে সময় দুলু বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে দাউদার মাহমুদ এর কাছে পদ বিক্রি করে দেয়।
এরপর থেকেই সিংড়া বিএনপির মূল ধারার নেতা-কর্মীরা দাউদার মাহমুদকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এর মধ্যে বিক্ষোভ মিছিল, সংবাদ সম্মেলনে করেছেন মূল ধারার বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

নেতা কর্মীদের অভিযোগ, দুলু ক্ষমতার অপব্যবহার করে তৃণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের দোসর ও আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। এরপরও গত ১৬ অক্টোবর জেলা বিএনপির সভাপতি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু দাউদার মাহমুদকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করে চিঠি দেয়। এতে ফুঁসে উঠে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল ফটিক বলেন, সিংড়া বিএনপির সার্বিক হালচাল তুলে ধরে গত ৫ অক্টোবর ঢাকায় দুলুর সাথে সকল নেতা-কর্মী নিয়ে আমরা মিটিং করি। সেখানে দুলু সিংড়া বিএনপিকে রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তিনি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দাউদার মাহমুদ এর কাছে উপজেলা বিএনপির পদ বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, দাউদার মাহমুদ একজন আন্তর্জাতিক গাড়ী চোর চক্রের সদস্য। তার নামে একাধিক গাড়ী চুরির মামলা রয়েছে। আগামী জানুয়ারী মাসে গাড়ী চুরির একটি মামলার রায় হবে। এ বিষয়ে দুলুর কাছে আমরা সকল প্রমাণ দিয়েছি। কিন্তু তারপরও তিনি দাউদারকে সাধারণ সম্পাদক করেছেন।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান মুন্টু অভিযোগ করে বলেন, বিগত নির্বাচনে দুলু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন এবং দলীয় পদ বিক্রি করেছেন। তাতেও তিনি ক্ষান্ত হননি। তিনি আরো বলেন, সিংড়া বিএনপিকে বাঁচাতে আমরা তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সেই সাথে দুলুকে সিংড়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং দাউদার মাহমুদকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।

এবিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বলেন, দুলুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার কথা শুনেছি। তবে কেন তারা অবাঞ্ছিত করলো সে বিষয়ে বোধগম্য নয়। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে পরে জানাতে পারবো। টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে দুলুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে এমন প্রশ্নে আমিনুল হক বলেন, এটা আমার জানা নেই, তবে উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কারণে দাউদারকে দুলু সাধারণ সম্পাদক করেছেন।

নাটোর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, পদটি খালি থাকায় পার্টির হাই কমান্ডের নির্দেশে দাউদার মাহমুদকে সিংড়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

স/শা