দুর্গাপূজায় ৩ দিনের ছুটির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি

দুর্গাপূজায় ৩ দিনের সরকারি ছুটির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট। সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ স্মারকলিপি দেয়া হয়।

স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায় স্বাধীনতার পূর্ব হতেই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত শতভাগ ভোট আওয়ামী লীগকেই দিয়ে থাকে। সেকারণেই এই সরকারের প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের আশা আকাঙ্ক্ষা অনেক। আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন দুর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব, বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্যও বটে।’

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘প্রতিটি পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য পড়াশুনা, চাকরি বা ব্যবসার প্রয়োজনে অন্যত্র বসবাস করেন। সেজন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা পরিবার পরিজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য সারাবছর এই দিনগুলোর জন্য অপেক্ষায় থাকেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দুর্গাপূজায় ৫ দিনের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও সরকারিভাবে মাত্র একদিনের ছুটি থাকে, সেটাও বিজয়া দশমীর দিন। ফলে দুর্গা পূজায় কারও পক্ষেই গ্রামে গিয়ে পরিবার পরিজনের সঙ্গে ধর্মীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থাকে না। বিজয়া দশমীতে পিতা মাতা, ও প্রতিবেশী গুরুজন ব্যক্তিদের প্রণাম করা ও আশীর্বাদ গ্রহণ একটি ধর্মীয় সামাজিক রীতি। এর মধ্য দিয়ে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সৃষ্টি হয়। কিন্তু একদিন ছুটি থাকায় কারও পক্ষেই গ্রামে গিয়ে পিতা মাতা বা গুরুজনদের সান্নিধ্য লাভের সুযোগ থাকে না। ফলে পূজার দিনগুলো পিতা মাতা সন্তান, স্বামী, স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ মানসিক কষ্টের মধ্যেই দিন কাটাতে বাধ্য হয়।’

আরও বলা হয়, ‘গত ১৪ বছর ধরে হিন্দু সম্প্রদায় মানববন্ধন, স্মারকলিপি, গণস্বাক্ষরসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছে। সংবিধানের মূলনীতিতেও ধর্মনিরপেক্ষতার বিধান রয়েছে। এরপরও দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দুর্গাপূজায় ৩ দিনের ছুটির দাবিটি উপেক্ষিত। আমরা আশা করি, আসন্ন দুর্গাপূজার আগেই হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবিটি আপনি নির্বাহী আদেশে ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করবেন। তাহলে হিন্দু সম্প্রদায় চিরদিন আপনাকে স্মরণ করবে।’

স্মারকলিপি প্রদান করেন হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাড. বিধান বিহারী গোস্বামী, মহাসচিব অ্যাড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, সাধারণ সম্পাদক সজিব কুন্ডু তপু; হিন্দু ছাত্র মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি বাবুল কর্মকার, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মৌসুমী রায়, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক বাঁধন ভৌমিক, মলয় কুমার রাহুল, সুমন কুমার রায় ও বিশ্বজিত হালদার।