দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা মনোনয়নে এগিয়ে দুই প্রত্যাশী

গোলাম রসুল,দুর্গাপুর
একএক করে পৌরসভা নির্বাচনে চতুর্থ দফা তফসিল ঘোষণা হয়েছে। দুর্গাপুর পৌরসভার নাম ঘোষণা না হলেও যে কোন সময় পঞ্চম দফা তফসিল ঘোষণা হবে। আর এই তফসিলে দুর্গাপুর পৌরসভার নাম ঘোষণা হবে এমটাই নিশ্চিত হয়ে আটঘাট বেঁধে দলীয় মনোনয়নের আশায় প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রার্থীরা।

তবে অন্য দলের প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা না গেলেও নৌকার মনোনয়ন চেষ্টায় দৌড়ঝাঁপ করেত দেখা গেছে বেশ কিছু প্রার্থীকে। এরই মধ্যে নৌকার মনোনয়নে হিসাব নিকাশ কোষচ্ছেন দুই প্রার্থীকে ঘিরে। এরা হলেন বর্তমান দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগে সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস প্রভাষক আমিনুল হক টুলু।

এই দুই প্রার্থীর মধ্যেই নৌকার টিকেট হবে এমনটাই মনে করছেন পৌরবাসী ও নেতারা। বর্তমানে দলীয় সমর্থন পাওয়ার আশায় পাশাপাশি জনগণের সমর্থন আদায়েও তারা নিজস্ব অনুসারী নিয়ে প্রতিনিয়ত ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এরই মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পৌঁছানো হয়েছে। মোট ১০জন প্রার্থীর নামে ওই তালিকাটি পাঠানো হয়। নাম পাঠানোর পর থেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা স্থানীয়, জেলা ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র নেতাদের সাথে যোগাযোগ রেখে মনোনয়ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়াও নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশায় রয়েছেন পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান ফিরোজ, সাধারণ সম্পাদক আজাহার আলী, হাসানুজ্জামান সান্টু, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাহাদত হোসেন,সাবেক জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও সুকুমার রায়। তবে লিস্টে তাদের নাম পাঠানো হলেও নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়ভাবে রয়েছেন মাত্র ২জন প্রার্থী। এমনকি ওই তিনজন প্রার্থী দলীয় সকল প্রকার কর্মকান্ডে সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন।

নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচনের পথম দফা তফসিল ঘোষণার অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে পৌর এলাকায়। এরই মধ্যে নির্বাচনে প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ব্যানার ও ফেস্টুন ঝুলিয়ে দিয়েছেন পৌরসভার বিভিন্ন অলিতে-গলিতে। এছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বিভিন্ন মহল্লায়ঘুরে ঘুরে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। একই সাথে প্রার্থীরা দলের সিনিয়র জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন দলীয় সমর্থন পেতে।

তবে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বর্তমান মেয়র তোফাজ্জল হোসেন প্রচারণায় অনেকটাই এগিয়ে থাকলেও দলের হাইকমান্ডের একটি অংশ তাকে চাচ্ছেন না। এমনকি তোফাজ্জলের বিরুদ্ধ্যে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর (নৌকার) বিপক্ষে উপজেলা ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে ভোট করাও অভিযোগ রয়েছে। যার কারনে বর্তমানে তিনি নেতা ও জনশূন্য হয়ে পড়েছেন। এমন অনেক অভিযোগের কারনে তারপতি আস্থা হারিয়েছেন ফেলেছেন নেতারা। ফলে অনেক নেতারাই পৌর নির্বাচনে পরিবর্তন চাচ্ছেন। এদিকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী

প্রভাষক আমিনুল হক টুলুর পক্ষে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তার পক্ষে মোটরসাইকেল শোডাউন, মিছিল মিটিং করছেন তারা। বর্তমানে তিনি নৌকা মনোনয়নে অনেকটাই এগিয়ে আছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা রিয়াজুল ইসলাম রেন্টু বলেন, আমরা নৌকার টিকিট পাওয়া আশায় প্রভাষক আমিনুল হক টুলুর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশাবাদি তৃণমূল নেতাকর্মীদে চাওয়া পাওয়া ভিত্তিতে সঠিক ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হলে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন। এছাড়াও যেই দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আসবে আমরা তার জন্য কাজ করবো।

জানা যায়, ২০০২ সালে ২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠন করা হয় দুর্গাপুর পৌরসভাটি। পৌর সভা গঠনের পর বিএনপির নেতা সাইদুর রহমান মন্টু ২০১০ সাল পর্যন্ত মেয়র হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন। এর পর ২০১১ সাল থেকে পরপর দুইবার পৌরসভার মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন।