দুর্গাপুরে সরকারের বেঁধে দেয়া দামে মিলছে না অনেক পণ্য

গোলাম রসুল, দুর্গাপুর :
প্রতিবছর রমজান এলেই বেড়ে যায় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক দাম। সরকার দ্রব্যমূল্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তা কাজে আসছে না ভোক্তাদের। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমদানিকৃত থেকে শুরু করে দেশীয় উৎপাদিত সকল পণ্যই ভোক্তাদের হাতের নাগালের বাহিরে চলে গেছে। বর্তমানে এমন বাজার বিরাজ করায় মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

এমন পরিস্থিতিতে গত ১৫ মার্চ শুক্রবার ২৯টি কৃষিপণ্যের দাম বেঁধে দেয় সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু গত ৪দিন অতিবাহিত হলেও সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত দামে মিলছেনা কোনো পণ্যই।

সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা ৪০ পয়সায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি। একইভাবে কাঁচা মরিচ, দেশি রসুন, আমদানিকৃত আদা ও আলুর দামেও বড় পার্থক্য রয়েছে। বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি দেশি ছোট আলু ৪৫ টাকা। আর বড় আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। যা সরকার নির্ধারণ করেছে ২৮ টাকা ৫০ পয়সা।

গরুর মাংসের দাম ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৭৫০ টাকা কেজি দরে। বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরকার-নির্ধারিত দাম ১৭৫ টাকা। যা বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা কেজি দরে। সোনালী মুরগী সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম ২৬২ টাকা কেজি। যা বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকা কেজি।

এছাড়াও প্রতি কেজি খেসারির ডাল ১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। যদিও সরকার-নির্ধারিত দাম ছিল ৯২ টাকা। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি। যা সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত দাম ৯৮ টাকা ৩০ পয়সা। তবে বিভিন্ন মাছ ও ডিম সকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত দামেই পাওয়া হচ্ছে। এছাড়াও রোজায় ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ জাহিদি খেজুরের কেজি সর্বোচ্চ ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকায়। এছাড়াও অন্যান্য খেজুরের দামও আকাশ ছোঁয়া।

বাজারে মাংস কিনতে আসা আমজাদ হোসেন জানান, সরকারের ঘোষণা দেখে বাজারে মাংস কিনতে যাই। গিয়ে দেখি মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা। তিনি তাদের কাছ থেকে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে মাংস চাইলে মাংস ব্যবসায়ী তাকে বলেন যারা দাম নির্ধারণ করেছে তাদের কাছে গিয়েই ওই দামে মাংস কিনেন আমাদের কাছে না।

মণির মিয়া নামের একজন ক্রেতা বলেন, সকালে বাজারে এসে পেঁয়াজ কিনলাম ৮৫ টাকা কেজি, সোনালী মুরগী নিলাম ২৯০ টাকা কেজি। এসব পণ্য যদি সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে নাই পাই তাহলে জনগনের সাথে এমন তামাসার কি দরকার ছিলো।

গরুর মাংস ব্যবসায়ী আজগর আলী জানান, গরুর দাম তুলনামুলক বেশি। তাই সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আমরা মাংস বিক্রি করতে পারছি না। তাদের বেঁধে দেওয়া দামে মাংস বিক্রি করলে আমাদের লোকশান গুনতে হবে।

মুরগী ব্যবসায়ী মোস্তফা বলেন, আমরা ঠিকমত মুরগীই পাচ্ছি না। আবার পেলে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আমরাতো আর লোকশান দিয়ে ব্যবসা করতে পরবো না। তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করছি।

মুদি ব্যবসায়ী মিলন জানান, বাজার যাচাই না করে খেয়ালখুশি মতো দাম বেঁধে দিলে তো হবে না। আগে উপরের বড়বড় কর্তাদের ঠিক করতে হবে। তবেই বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে।