দুর্গাপুরে সকালে অবৈধ মজুদের দায়ে সার জব্দ, বিকালে বৈধ!

দুর্গাপুর প্রতিনিধি:
দুর্গাপুরে অবৈধভাবে সার মজুদের দায়ে আব্দুল হালিম শাহ নামের এক ব্যবসায়ীর গুদামের সার জব্দ করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মসিউর রহমান। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় উপজেলার হরিরামপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তবে বিকালে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট লিটন সরকারের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবসায়ী হালিমের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে সারগুলোকে বৈধ করে দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার হরিরামপুর বাজারে একটি ট্রাক আসে। ওই ট্রাকে কী আছে তা কেউ জানে না। তবে রাত ভারি হলে হালিমের কিছু লোকজন ওই ট্রাকে থাকা সার তড়িঘড়ি করে গুদামে নামিয়ে ট্রাক সরিয়ে দেন। পরে গোপনে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানান স্থানীয় কৃষকরা। খবর পেয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সকালে তার সার মজুদ গুদামে অভিযান চালায়। এসময় তার গুদামে বাংলা টিএসপি ২২০ বস্তা, বাংলা ডিএপি ২১০ বস্তা, তিউনেশিয়া ২৭৫ বস্তা সার পাওয়া যায়। এসময় হালিম তার মজুদকৃত সারের কোন প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি। ফলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গুদামের মজুদকৃত সারগুলো জব্দ করে গুদামে তালা ঝুলিয়ে আসেন। তবে সকালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার জব্দ করা সারগুলো বিকালে বৈধ করেন নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট লিটন সরকারের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, আব্দুল হালিম দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে সারের ব্যবসা করে আসছেন। যার ফলে এর আগেও তার সারগুদাম থেকে অবৈধ সার জব্দ করা হয়। কিন্তু কোন কৃষকের সার অবৈধভাবে মজুদ করে উচ্চ মূল্যে বিক্রির দায়ে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। এমনকি তিনি সারগুলোর সাথে বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

এদিকে, উপজেলা বিসিআইসি’র নিয়োগকৃত ডিলাররা অভিযোগ করে বলছেন, সরকারিভাবে দীর্ঘ ছয়মাস থেকে সারের কোন বরাদ্দ নেই। তবে ওই সব অসাধু ব্যবসায়ীর কারনে কৃষকরা দফায় দফায় ক্ষতির মুখে পড়ছে। তারা অবৈধভাবে সার মজুদ করে সাধারণ কৃষকদের কাছে উচ্চ বাজার মূল্য নিয়ে বিক্রি করে চলেছেন। স্থানীয়ভাবে প্রশাসনের নজর না থাকায় সাধারণ কৃষকরা প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মসিউর রহমান বলেন, সকালে হালিমের সারের গুদামে অভিযান চালানো হয়। এসসময় মজুদকৃত সারের সরকারি বা বিসিআইসি’র নিয়োগকৃত কোন ডিলারের ছাড়পত্র দেখাতে পারেনি তিনি। ফলে সারগুলোকে গুদামে অবৈধ মজুদ বলে জব্দ করা হয়।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন সরকার বলেন, সারগুলোর কোন ছাড়পত্র না থাকার কারনে অবৈধ মজুদের দায়ে তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। তবে সারগুলো জব্দের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

স/শা