দুর্গাপুরে টানা বৃষ্টিতে বিপাকে কর্মজীবী মানুষ

দুর্গাপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর দুর্গাপুরে থেমে থেমে টানা ৫ দিনের বৃষ্টিপাতের কারণে উপজেলায় জনজীবনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ভারী এই বর্ষণে এ উপজেলার কৃষি জমিতে থাকা পটল, বেগুন, মরিচসহ বিভিন্ন সবজি ফসলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন।

এদিকে টানা এই বৃষ্টি হওয়ার কারনে কাজ না পাওয়ায় এনজিওর কিস্তি থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন অনেক কর্মজীবি মানুষ। এমনকি পশু পাখিরাও এই বর্ষনের শিকার হয়েছেন। এই বৃষ্টিতে ঘর থেকে বেরুতে পারছে না এ উপজেলার সাধারণ মানুষ ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীরা। বর্ষনের কারনে কাজ না পেয়ে এনজিও’র কিস্তি থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকস সাধারণ পরিবার।

উপজেলার নওপাড়া, কিশমত গনকৈড়, পানানগর, দেলুয়াবাড়ী, ঝালুকা, মাড়িয়া জয়নগরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টানা ৫ দিনের বর্ষনে খাল-বিল, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ পানিতে ভরে গেছে। উপজেলার নিমাঞ্চল এলাকায় সদ্য রোপনকৃত ধান বীজসহ বিভিন্ন বীজ পঁচে যাচ্ছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। এদিকে শুরু হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রী পাস কোর্স-এর পরীক্ষা। বৃষ্টির মধ্যে অনেক কষ্ট করে কেউ ছাতা মাথায় দিয়ে কেউবা নাদিয়ে বৃষ্টির পানিতে ভিজে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ পানিতে ডুবে যাওয়ার ফলে স্কুল কলেজে যেতে পারছে না অনেক শিক্ষার্থী। ফলে সকল শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় চরম বিঘ্নিত হচ্ছে। এদিকে বর্ষনের সাথে চলছে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং। এছাড়াও বৃষ্টির কারনে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি অফিস, ব্যাংক, বীমা অফিস গুলোতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের আনাগোনা অনেক কম দেখা গিয়েছে।

৫দিনের টাকা বর্ষনের ফলে রাস্তাঘাট গুলো ভেঙ্গে যাওয়াসহ রাস্তায় পানি ওঠার ফলে যান চলাচলে বিঘ্নতার সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। খাদ্যের অভাবে বাড়ীতে বন্দি হয়ে থাকা গৃহপালিত পশুদের নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় পড়েছেন পশু পালনকারিরা।

উপজেলার সুখাদিঘী গ্রামের আনছার বলেন, টানা বৃষ্টির কারনে তার ১০ কাঠা জমিতে থাকা পটল পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়ও ভারি বৃষ্টির কারনে মরিচ গাছগুলো গোড়া পঁচে গাছ মরে যাচ্ছে। এভাবে আর দুই একদিন বৃষ্টি থাকলে ব্যাপক লোকশান গুনতে হবে তাকে।

এদিকে চৌবাড়িয়া গ্রামের ভ্যান চালক আবুল কালাম ও জামাল উদ্দিন জানান, তার বিভিন্ন এনজিও থেকে কিস্তি উত্তোলন করে ভ্যান গাড়ি কিনে চালাচ্ছেন। গত প্রায় এক সপ্তাহ থেকে বৃষ্টির কারনে তার গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামতে পারেননি। ফলে তার কিস্তির টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের মাহাবুর রহমান বলেন, আমার মেয়ে সপ্তম শ্রেণিকে পড়ে। ৩ কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুর উপজেলা সদরে তার বিদ্যালয়। বৃষ্টির কারণে প্রায় তিনদিন থেকে সে স্কুল ও পাইভেটে যেতে পারছে না। এতে তার বিদ্যালয়ের পড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। উপজেলার আলীপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার জানান, তার ৪টি গরু ও ৫টি ছাগল রয়েছে। বৃষ্টির কারনে তাদের মাঠে নিয়ে যেতে পারছেন না। বর্ষার কারণে গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি।

 

স/শা