দুর্গাপুরে অসহায় চাহনিতে শীতার্তরা

গোলাম রসুল, দুর্গাপুর:
রাজশাহী দুর্গাপুরে হাড় কাঁপানো শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে শীতার্ত মানুষ। আর এই শীতে তাদের পাশে দাঁড়ানোর যেন কেউ নেই। ফলে চেয়ে আছেন এ উপজেলার হাজারো হতদরিদ্র ওইসকল মানুষ সরকারসহ এনজিও ও বৃর্ত্তবানের দিকে। কয়েকদিন থেকে কনকনে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় এখানকার নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষের জীবন জীবিকা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

কাজ না থাকায় ঘরে খাবার নেই, শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পবার নেই কোন প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রও। তীব্র ঠান্ডার কারণে দিনের অনেকটা সময় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না কর্মজীবী মানুষ। আথচ তাদের দিকে তাকানোর যেন কেউ নেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, প্রতিষ্ঠিত এনজিও কেউই একন পর্যন্ত শীতার্ত মানুষের সাহাযার্থে এগিয়ে আসেনি। ফলে চরম দুর্ভোগের মধ্যেই তারা দিন যাপন করছেন।

এছাড়াও দুুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঠান্ডাজনিত রোগের কবলে পড়ে হাসপাতালগুলোতেও ভিড় করছেন অনেক রোগীরা।

জানগেছে, দুর্গাপুর উপজেলা প্রায় অর্ধ শতাধিক এনজিও বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। অথচ এখনও পর্যন্ত ওই সকল এনজিও কর্মকর্তারা কেউ এগিয়ে আসেনি শীতার্তদের পাশে। এছাড়াও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, সরকারী ভাবে আশা হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণকৃত কম্বল শীতের শেষের দিক থেকে শুরু করা হয় বিতরণ। যা শীতার্ত মাণুষের কোনওই কাজে আসে না।

উপজেলার আলীপুর গ্রামের হতদরিদ্র নুরজাহান বেগম জানান, এখন পর্যন্ত কোনো এনজিও বা কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের খোঁজ নেয়নি। শুনেছি, অনেক জায়গায় নাকি সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে শীতের কাপড় দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু আমাদের গ্রামের কোথাও শীতের কাপড় বিতরণ করা হয়নি। উপজেলার চৌবাড়ীয়া গ্রামের ভ্যান চালক মজনু ও দিনমুজুর সুজন আলী বলেন, এ উপজেলার কয়েক হাজার হতদরিদ্র মানুষ শীতের তীব্রতায় সার্বক্ষনিক কষ্ট করলেও জনসেবক নামের নেতারা কেউ আমাদের খোঁজ নেননি ও পাশে দাঁড়াননি। এমনকি এনজিওরাও না। আথচ ভোটের সময় আমাদের কদর বেড়ে যায় নেতাদের কাছে।

দুর্গাপুর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আমিনুল হক বলেন, সমাজে অনেক মানুষ আছেন, যারা বছর বছর নতুন করে শীতের কাপড় ক্রয় করেন। কিন্তু, পাশের বাড়ির কোনো বৃদ্ধ বা শিশু শীতে থর থর করে কাঁপছে, এটা তাদের বোধে আসে না। তাদের বাড়িতে যখন পোষা কুকুরটা কম্বল, সোয়েটার পরে থাকে, তখন গরিব প্রতিবেশীর ভাগ্যে একটা ছেঁড়া চাদরও জোটে না। এটাও তারা কখনো চিন্তাও করে দেখে না।

তিনি মনে করেন, সমাজের সকল বিত্তবানদের উচিত শীতার্ত মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানো এবং তাদের সাধ্য অনুযায়ী ওই সব মানুষকে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার। সরকারী কম্বল বিতরণ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন সরকার বলেন, সরকারী বরাদ্দকৃত কম্বল আমাদের উপজেলাতে এসেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারনে কম্বল তিবরণের কাজ স্থগিত ছিলো। কম্বল বিতরণের তালিকার কাজ চলছে, আগামি কয়েকদিনের মধ্যে বিতরণের কাজ শুরু করা হবে।

 

স/আ