দুর্গাপুরের তিন মাদকসেবীর তাণ্ডব থামছেই না, তটস্থ গ্রামবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর দুর্গাপুরের আমগাছী গ্রামের তিন মাদকসেবী ক্রমেই বেপরোয় হয়ে উঠছে। তারা হলো ওই গ্রামের ইদ্রিস, জাইদুল ও তারিক। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তারা একের পর এক সাধারণ মানুষসহ চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ীদেরও ওপর হামলা করছে। এ নিয়ে তটস্থ হয়ে আছে গ্রামবাসী। চলতি বছরেই এই তিন মাদকসেবী ওই গ্রামের অন্তত ৭ জনকে পিটিয়ে জখম করেছে। যার মধ্যে একজন অসহায় নারীও রয়েছেন। এর বাইরে অন্যদের পেটানো হয়েছে চাঁদার দাবিতে। তারা সকলেই আমগাছী বাজারে বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, কারো বিরুদ্ধে মাদক কেনাবেচার দায়ে রয়েছে মামলা, কেউ মাদকসেবী আবার কেউ মাদকসেবন করে নারীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগে অভিযুক্ত। কিন্তু এই তিন মাদকসেবী একের পর এক তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছেই। তাদের দাপটে চরমভাবে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। দিনের বেলা এই তিন মাদকসেবী অনেকটা গা-ঢাকা দিয়ে থাকলেও রাতের বেলায় একের পর এক সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা করে চলেছে।

সর্বশেষ গত শনিবার রাত সাড়ে নয়টার চাঁদার দাবিতে আমগাছী বাজারের বড় ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট এবং মারধর করেছে তিন মাদকসেবী জাইদুল, ইদ্রিস আর তারিক। এতে ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনার পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই ওই মাদকসেবীরা পালিয়ে যায়। এসময় তারা লক্ষঅধিক টাকাও লুট করে।

শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাবা গুরুতর অসুস্থ। তাকে নিয়েই চিন্তিত আমরা পরিবারের লোকজন। সেই মুহূর্তে এসে চাঁদার দাবিতে ওই মাদকেসবীরা আমার দোকানে হামলা করে। এসময় তারা তার সিমেন্টের দোকান থেকে লক্ষাধিক টাকাও লুট করে। তাকে উদ্ধার করতে গেলে দোকানের কর্মচারীসহ স্থানীয় আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী আহত হন। ওই মাদকসেবীরা এভাবে একের পর এক সাধারণ মানুষকে মারপিট করে চলেছে তারা।

দুর্গাপুর থানার ওসি রুহুল আলম বলেন, ওই তিন মাদকসেবীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। শনিবার রাতে ব্যবসায়ীর ওপর হামলা এবং দোকানপাট ভাংচুরের ঘটনায়ও জড়িত তারা। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এই তিন মাদকসেবী ওই গ্রামের মোজাহারের স্ত্রীকে মারপিট করে পা ভেঙে দেয়। এ ঘটনার পর স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে দেয়ার জন্য তারা ওই গ্রামের প্রধানদেরকে চাপ দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। আহত ওই নারী মামলা করতে গেলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে ওই তিন মাদকসেবী।

স্থানীয় তাহাজ আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, তিন মাদকসেবীর দাপট ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এরা যাকে যখণ খুশি তাকেই মারধর করছে। প্রতিবাদ করলে আবার রাতের বেলা গিয়ে তার ওপর হামলা করছে। অথবা ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। এভাবে চলতে পারে না। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে এরা আরও বড় ধরনের অপকর্ম ঘটাতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ঝালুকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, ওই মাদকসেবীরা চরম বাড়াবাড়ি শুরু করেছে। তারা ব্যবসায়ী শফিকুলের ওপর অন্যায়ভাবে হামলা করে তাকে মারপিট করেছে। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

স/আর