দু’কেজির জন্য অলিম্পিক পদক হাতছাড়া পাকিস্তানের তালহার!

ব্রোঞ্জজয়ীর সঙ্গে ব্যবধান ছিল মাত্র দু’কেজির। সেই ব্যবধানের জন্যই স্বপ্নভঙ্গ হল পাকিস্তানের ভারোত্তলক তালহা তালিবের। ভারোত্তলনের ৬৭ কেজি পুরুষ বিভাগে পঞ্চম স্থানে শেষ করলেন তিনি। সেইসঙ্গে ২৮ বছর পর পাকিস্তানের সামনে যে অলিম্পিক পদক জয়ের সম্ভাবনা এসেছিল, তাও একেবারে হাতের নাগালে এসে ফসকে গেল।

চলতি বছরের এপ্রিলে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জয়ের পর টোকিও অলিম্পিকে তালহাকে অনেকেই ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজ’ হিসেবে দেখছিলেন। যিনি ৪৫ বছরে প্রথম পাকিস্তানি ভারোত্তলক হিসেবে অলিম্পিকে ছাড়পত্র পান। দেশীয় ক্রীড়া মহলের একাংশের ধারণা ছিল, সবকিছু ঠিকঠাক চললে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর আবারও পদক জিততে পারে পাকিস্তান।

রবিবার (২৫ জুলাই) সেই প্রত্যাশা অনেকটাই পূরণ করেন তালহা। ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজ’ হিসেবে দুরন্ত শুরু করেন ২১ বছরের পাকিস্তানি ভারোত্তলক। নিজের শক্তিশালী স্ন্যাচে ১৫০ কেজি তোলেন। সেইসময় দ্বিতীয় স্থানেও ছিলেন। কিন্তু ধাক্কা খান ক্লিন অ্যান্ড জার্কে। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের পারফরম্যান্সকে ছাপিয়ে গিয়ে তৃতীয় চেষ্টায় ১৭০ কেজি উত্তোলন করেন। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। স্ন্যাচ এবং ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলিয়ে তিনি ৩২০ কেজি তোলেন। ব্রোঞ্জজয়ী ইতালির মিনো জান্নি ৩২২ কেজি উত্তোলন করেন। ৩২১ কেজি ভার উত্তোলন করে চতুর্থ হন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিযোগী।

অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হলেও তালহার পারফরম্যান্সে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত পাকিস্তানিরা। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াই যেভাবে অলিম্পিক মঞ্চে যেভাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন ২১ বছরের ভারোত্তলক, তাতে মুগ্ধ হয়েছেন নেটিজেনরা। পাকিস্তানের ক্রীড়া পর্ষদ এবং পাকিস্তানের ভারোত্তলক সংগঠনের বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষোভ ঝেড়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ২০১৮ সালে কমনওয়েলথ গেমসে যখন ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন, তখন যদি তালহাকে আন্তর্জাতিক মানের অনুশীলনের সুযোগ দেওয়া হত, তাহলে ২৮ বছর পর নিশ্চয়ই অলিম্পিকে পাকিস্তানের পতাকা উড়ত।

নেটিজেনদের ক্ষোভ যে একেবারেই অমূলক নয়, তা বলাই বাহুল্য। অলিম্পিকের আগে একাধিক পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেই জানানো হয়েছিল, গুজরানওয়ালায় নিজের বাড়িতে যেভাবে প্রশিক্ষণ করতেন তালহা, তা অভাবনীয় বিষয়ের থেকে কম কিছু নয়। স্থানীয় একটি স্কুলের কাছে অস্থায়ী জিমে যতটা পারতেন অনুশীলন করতেন। ক্রীড়া মহলের আশা, ২১ বছরের তরুণের হাতে এখন প্রচুর সময় আছে। তিনি যদি সঠিক অনুশীলনের সুবিধা পান, তাহলে একদিন তাঁর গলায় অলিম্পিকের পদক অবশ্যই উঠবে।