দুঃখ মুছে হানুফা খালার মুখে হাসি ফোটাতে চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি:
‘হানুফা খালাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরী বিভাগের গেটের সামনে আমরা একটি দোকান করে দিয়েছি। উনাকে স্থায়ীভাবে বড় দোকান করে দিতে চাই। উনার পরিবারকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছল করতে চাই। তার মুখে হাসি ফোটাতে চাই। তাছাড়াও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আকুতি জানিয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছি। আশা করছি আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় হানুফা খালা স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন।’ কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান এহসান। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে চেয়ে চিন্তে যা পেতেন তাই ছিলো অসহায় হানুফার  সম্বল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করে সংসার চালাতো হানুফা বেগম। বড় পরিবারের ভরণপোষণ, দুই নাতি-নাতনির পড়াশোনার খরচ, অসুস্থ ছেলের চিকিৎসা ব্যয় সবকিছুর জন্য লজ্জা-সংকোচ চেপে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কাছে হাত পাততে হতো। যে যা পারতেন তাই দিয়ে সাহায্য করতেন ক্যাম্পাসের পরিচিত হানুফাকে। দীর্ঘদিন ধরেই ইচ্ছে ছিল নিজের একটি কর্মসংস্থানের। হানুফার বড় ছেলে স্ট্রোক করে বাসায় থাকেন। নাতনি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী, নাতি প্রাইমারি শেষ করেছে। হানুফা ও তার ছেলের প্রতিমাসে ঐষধ খরচ লাগে ৪০০০-৫০০০ টাকা।

অসহায় ও দরিদ্র হানুফার পাশে দাড়িয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার এ ইচ্ছা পূরণ করেছেন রাবির ছাত্রলীগ নেতা ও তিন এএসপি। তারা হলেন, নেসারাবাদ সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার কাজী শাহনেওয়াজ টোকন, ঢাকা ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম সাকলায়েন শিথিল, রাজশাহী বোয়ালিয়া থানার এসি একরামুল হক।

হানুফা বেগম জানান, ছেলে অসুস্থ হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণসহ নাতি-নাতনির পড়াশোনার খরচ, ছেলের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হতো তাকে। এর জন্য রাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে হাত পাততেন তিনি। দোকান পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমার ভিক্ষা করতে ইচ্ছে হয় না, নিরুপায় হয়ে ভিক্ষা করতাম। এখন ক্যাম্পাসের ছাত্ররা আমাকে একটি দোকান করে দিয়েছে। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান এহসান ও এএসপিদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, মানুষ মানুষের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের সামান্য উদ্যোগই কিন্তু একটি মানুষ বা একটি পরিবারের জীবনই বদলে দিতে পারে। হানুফা খালা একটা দোকান চেয়েছেন। আমরা প্রাথমিকভাবে একটি দোকান করে দিয়েছি, ভবিষ্যতে আরও বড় দোকান করে দেয়ার ইচ্ছে আছে। হানুফা খালার প্রয়োজনে আমরা এগিয়ে এসেছি, এতে তার যদি উপকার হয় তাতেই আমাদের সার্থকতা।

স/শা