তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য চায় বাংলাদেশ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট (টিকফা) কাউন্সিলের চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণপূর্বক অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা, টেকনোলজি ট্রান্সফার, বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধি, ডিজিটাল ইকোনমি এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্র্যাজুয়েশনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া হয়।

অন্যদিকে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশের প্রতি উদ্বেগ জানিয়ে আবারও বাংলাদেশের জিএসপির আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভের দফতরে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী এ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু। এছাড়া বাংলাদেশ দলে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব আফরোজা খান, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল হাবিবুর রহমান খান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব মইনুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য প্রকাশ দেওয়ানসহ ১২ জন অংশ নেন।

অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সহকারী ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ মার্ক লিন্সকট। এছাড়া উপসহকারী ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ জেবা রেয়াজুদ্দিন, ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কাউন্সিলর বিল মোলারসহ ২০ জন প্রতিনিধি সভায় অংশ নেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সভায় জানানো হয়, দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ একক রফতানি বাজার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে এবং বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।

সভায় বাংলাদেশের পক্ষ হতে বাণিজ্য সহযোগিতাকরণ চুক্তি (টিএফএ) বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশাধিকার সম্প্রসারিত করা এবং এক্ষেত্রে ডব্লিউটিওর বালি মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্সের সিদ্ধান্তের আলোকে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা বৃদ্ধির অনুরোধ জানানো হয়। নার্স, মিডওয়াইফসহ অন্যান্য সেবা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ সহজীকরণের অনুরোধও জানানো হয়। এছাড়া বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের তথ্য তুলে ধরে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বৃদ্ধিরও অনুরোধ জানানো হয়।

অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি বৃদ্ধি, বিশেষ করে তুলা ও ওষুধ রফতানি, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, সরকারি ক্রয়পদ্ধতি ও লেবার ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়।

এছাড়া বাংলাদেশের খসড়া ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় নোটিফিকেশনের জন্য বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ হতে অনুরোধ জানানো হয়।

আলোচনার বিষয়ে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভের (ইউএসটিআর) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়সহ সামগ্রিক শ্রম সংস্কারের বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং তারা আশা করে বেসরকারি খাতের সঙ্গে চলমান সহযোগিতার মাধ্যমে পরিস্থিতির আরও অগ্রগতি হবে। ২০১৩ সালে শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা ইস্যুতে জিএসপি বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে টিকফা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল টিকফা কাউন্সিলের প্রথম সভা ঢাকায়, ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর ওয়াশিংটনে দ্বিতীয় এবং ২০১৭ সালের ১৭ মে ঢাকায় তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।