রবিবার , ৭ আগস্ট ২০১৬ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

‘তেমন সুন্দর না হলেও ভালোবাসার প্রস্তাব পেয়েছি’

Paris
আগস্ট ৭, ২০১৬ ৬:৫০ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রার্থনা আর সেবা এই দুটি ব্রত নিয়ে যিশু খ্রিস্টের কাছে নিজেকে উৎসর্গ করেন খ্রিস্টান নানগণ।

ভোগ বিলাসের জীবন ত্যাগ করে ঈশ্বরের সেবায় এই ত্যাগী জীবন তাদের কেমন যায়?

ঢাকার তেজগাঁয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ‘মারিয়ার সঙ্গিনির সঙ্ঘ’ নামে কেন্দ্রীয় আশ্রমে গিয়ে দেখা গেলো বিভিন্ন বয়সী নান।

চ্যাপেলে চলছে সন্ধ্যারতি নামে সন্ধ্যা বেলার প্রার্থনা। যেখানে জড়ো হয়েছে সঙ্ঘের সকল বয়সী নানগণ।

ভোর ৫টা থেকে শুরু হয় তাদের এই প্রার্থনা। প্রভাত বন্দনা করে গির্জায় যান। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়েন নিজ নিজ সেবা কাজে।

প্রার্থনা থেকেই মূল শক্তিটা পান বলে জানান যিশুর জন্য আত্মত্যাগী কুমারীরা।

সিস্টার মেরি মিনতি, সঙ্ঘের এডমিনিন্সট্রেশন বিভাগে সুপিরিয়র জেনারেল হিসেবে দায়িত্বে আছেন।

সিস্টার মিনতি জানান, “নান হবার কিছু ধাপ আছে যা মেট্রিক এর পর শুরু হয়, সেই ধাপ চলে দুই থেকে আড়াই বছর। তাদেরকে কিছু প্রাথমিক ধারণা দেয়া হয় তারপর ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পরে তাদের কালীগঞ্জ গঠন গৃহে পাঠানো হয়”।

“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রথম বছর যাকে বলা হয় ‘ফার্স্ট ইয়ার নবীশ’। জীবন সম্বন্ধে এই এক বছর পড়াশুনা হয়। দ্বিতীয় বছরে ঢাকার বাইরে পাঠানো হয় সেবামূলক কাজ শিখতে। এরপর আড়াই বছরে গির্জায় যেয়ে ফাদারের কাছে বিশপের সামনে সব স্বীকার করতে হয়”-জানান সিস্টার মিনতি।

নানদের জন্য বাংলাদেশে মোট ২৮টি আশ্রম আছে এবং টিচার, ডাক্তার, নার্স, সমাজসেবী বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন সব মিলিয়ে ২১৬ জন সিস্টার।

সিস্টার মেরি জ্যাকলিন, মধ্যবিত্ত পরিবারে এক ভাই এক বোন। ব্রত জীবনের তাঁর ৪ বছর হলো।

ছোটবেলা থেকেই মেরি জ্যাকলিনের মধ্যে সিস্টার হবার আকর্ষণ ছিল।

নান হউয়ার ব্রত ৩টি।

বাধ্যতা, দারিদ্র ,কৌমার্য-আর এই ৩টি ব্রত ২২ বছর বয়সী জ্যাকলিন এর মনে কখনও কি বাধা সৃষ্টি করেনি?

সিস্টার জ্যাকলিন বলেন “অনেক সময় করে কারণ আমি ইয়াং মানুষ, স্বাভাবিক বাইরের যাবতীয় আমাকে আকৃষ্ট করতে পারে। বাইরে গেলে অনেকে জিজ্ঞেস করে মোবাইল আছে কিনা, খারাপ লাগেে মাঝেেমধ্য। আর এরকটা যেন না আসে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি।সারেন্ডার উইথ গড”।

কখনও কি কাউকে ভালো লাগেনি বা কেউ কি বলেনি ভালোবাসার কথা?

সিস্টার জ্যাকলিন জানান, ছোটবেলা থেকেই নান হওয়ার স্বপ্ন ছিলো তাই কখনও ওরকমটা ভাবেননি কিন্তু কেউ কেউ তাকে ভালোলাগার কথা প্রকাশ করেছে।

“আমি কিন্তু তেমন আহামরি সুন্দর নই। কিন্তু মানুষ হিসেবে প্রস্তাব আসতে পারে। আসছে। কিন্তু আমার ওরকম ঝোঁক আসেনি”-বলেন সিস্টার জ্যাকলিন।

ঈশ্বরের প্রতি নিজেকে সমর্পণ করে জীবনের অনেক ভোগ-বিলাস হতে তারা বঞ্চিত এমনকি মা হবার আনন্দকেও তাঁরা ত্যাগ করেন।

প্রবীণ সিস্টার ক্রিস্টদাশি এ প্রসঙ্গে বলছিলেন ব্রতগুলো নেয়ার সময় তাদের শিক্ষা দেয়া হয় যাদের পড়ানো হবে তারাই সন্তান।

“যাদের আমরা পড়াই তারাই আমাদের সন্তান। আমাদের সমস্ত ভালোবাসা তাদের জন্য কোন ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়”।

বাইবেলে লেখা আছে “দ্বারে হাত দিয়ে পেছনে কখনও যেন ফিরে না তাকাই”।

আর এই শক্তিই তাঁদের অন্তরকে জাগ্রত করে এমনটাই মনে করেন ঈশ্বরের সেবায় নিয়োজিত এই নানগণ।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ - জাতীয়