তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ: মাদকের বিরুদ্ধে পায়ে হেঁটে বাগাতিপাড়ার কনকের যাত্রা

মঞ্জুরুল আলম মাসুম, বাগাতিপাড়া:
মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে পায়ে হেঁটে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন আরিফুর রহমান কনক। গত ১২ অক্টোবর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া বাংলাবান্দা জিরো পয়েন্ট থেকে তিনি এ যাত্রা শুরু করেন। ৩ নভেম্বর শনিবার দুপুরে ডেমরা এলাকায় পৌঁছান।

তিনি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সাজামালঞ্চি গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে।

শনিবার মুঠোফোনে কথা হয় আরিফুর রহমান কনকের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার হাঁটেন তিনি। ভোর ৬ টা থেকে শুরু করে মাগরিবের নামাজের পুর্ব পর্যন্ত হাঁটেন। প্রতি ১০ কিলোমিটার পর পর ১৫-২০ মিনিট বিশ্রাম নেন। আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে তেঁতুলিয়া পৌছানোর আশা রয়েছে বলে তিনি জানান। রাতে যেখানে হাঁটা বন্ধ হয় ওই এলাকায় পরিচিত কারও বাসায় উঠে যান। আর সেরকম কাউকে না পেলে নিজ খরচে হোটেল ভাড়া করে রাত যাপন করেন।

তিনি রাজশাহী পলিটেকনিক থেকে ১৯৯৭ সালে ডিপ্লোমা শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। এর পর থেকে তিনি নিয়মিত ১৯ বছর মাদক সেবন করেন। তিনি কখনও কল্পনাও করেননি মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করবেন। তিনি দুবাইয়ে সাড়ে তিন বছর, সিঙ্গাপুরে এক বছর ও সৌদি আরবে পাঁচ বছর চাকরি করেছেন। বিদেশ থেকে এসেও নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। গত দুই বছর আগে তার বাবা মারা যান। তার পর থেকে কমতে থাকে কনকের মাদক সেবন। চলতি বছর ১৬ জানুয়ারি তার দ্বিতীয় সন্তান জন্মের ৩ দিন পর মারা যায়। এর পর থেকে মাদক সেবন বন্ধ করেন কনক।

তিনি আরো জানান, তার এই পথ চলায় যদি একজন মানুষও মাদক থেকে দূরে সরে আসে সেটাই হবে তার বড় পাওয়া। এরইমধ্যে তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চায়ের দোকান, বাজারসহ জনবসতি এলাকার মানুষদের মাদকের কুফল সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। ডিসি, এসপি, রাজনীতিকসহ বিভিন্ন মহল থেকে কনকের এই কর্মকা-কে স্বাগত জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, তার হাঁটার পথে যদি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পান সেখানেও শিক্ষার্থীদের মাদকের কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরছেন। ১৯ নভেম্বরের মধ্যে তেঁতুলিয়া পৌছাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এব্যাপারে বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পায়ে হেঁটে বাগাতিপাড়ার সন্তান কনকের এ যাত্রা প্রশংসার দাবিদার।

স/অ