‘তুমি ফিরে এসে ধন্য করেছো গোটা জাতিকে’

আব্দুস সাত্তার
‘মৃত্যুর দুয়ার ভেঙ্গে অমরত্ব লভিয়াছ/তুমি জ্যোতির্ময়/পূর্ণ কর স্বাধীনতা মুক্ত কর ভয়/ তোমারই আজ জয়।’ ‘জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য চিত্ত ভাবনাহীন, তুমি ফিরে এলে অপূর্ণতা ঘুচে, বাংলাদেশ হলো পূর্ণ স্বাধীন।’
বাংলার মা, মাটি আকাশ বাতাসে জানান দিচ্ছে কখন ওই মহামানব আসবে । কে জানে কখন কোন পথে জাতির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান আসবে, তাই সবার মধ্যে আনন্দের সুর বাজছে।  তেজগাঁও থেকে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত জাতির জনকের জন্য লক্ষ লক্ষ জনতা অপেক্ষা করছে তার প্রিয় মানুষটিকে এক নজর দেখার জন্য। সবার দৃষ্টি আকাশের দিকে। কখন উড়োজাহাজের শব্দ পাওয়া যাবে। তাহলেই কেবল নিশ্চিত হওয়া যাবে যে বঙ্গবন্ধু আসছেন তার প্রিয় স্বদেশভূমিতে। বঙ্গবন্ধুর জীবনের একমাত্র চাওয়া ছিল এদেশ পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত হোক। বঙ্গবন্ধু সবসময় এদেশের আপামর গরীব,দুঃখী ও মেহনতী মানুষের রাজনৈতিক , সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন নিরন্তর। বঙ্গবন্ধু অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলার মাটিতে ঐতিহাসিক ১০ই জানুয়ারিতে তার স্বদেশভূমিতে পর্দাপণ করেন। সেদিন জাতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। কেননা আদৌ মুজিব জীবিত আছেন নাকি মৃত-এরকম প্রশ্ন সবার মাঝে ঘুরপাক করছিল।

 
তবে হঠাৎ করে রাজনীতির মহাকবি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখলেন। পুরো দেশের মানুষই যেন জড়ো হয়েছিল ঢাকা বিমানবন্দর এলাকায়। অবশেষে বন্দীর নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বিজয়ীর বেশে নামলেন বিমান থেকে। পা রাখলেন লাখো শহীদের রক্তস্নাত স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে।  গোটা জাতি হর্ষধ্বনি দিয়ে তেজোদীপ্ত ‘জয় বাংলা’  স্লোগানে তাদের প্রিয়  নেতাকে স্বাগত জানায়।

 
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির বিকেল বেলা ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ বিমানযোগে বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমানবন্দর জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। বিমান থেকে বঙ্গবন্ধু প্রায় ৪৫ মিনিট ঘুরে ঘুরে দেখলেন  গোটা ঢাকা শহরের সব মানুষ যেন বিমানবন্দরকে ঘিরে আছে। একজন বিদেশী সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুর পাশেই বসা ছিলেন। হঠাৎ করে তিনি  দেখলেন বঙ্গবন্ধু হঠাৎ করে ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠলেন। তখন সেই সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার  তো আনন্দের দিন। আপনি কাঁদছেন কেন? বঙ্গবন্ধু কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, এত যে মানুষ আমার অপেক্ষায়। আমি ওদের খাওয়াবো কি? পাকিস্তানীরা তো সব ধ্বংস করে  গেছে।” মানবদরদী জাতির পিতা না হলে ওই মুহূর্তে এরকম কথা বলা যায় না। বঙ্গবন্ধুর উদ্বেগ ছিল খুব স্বাভাবিক। রাস্তাঘাট  নেই, ব্রিজ নেই, রাষ্ট্রীয়  কোষাগারে কোন টাকা নেই। আজ ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারির সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার মজুত আছে। এই খবর অনেকেই জানেনা যে  কিভাবে শুরু হয়েছিল আমাদের রাষ্ট্রীয়  কোষাগার। কানাডা সরকার তখন বঙ্গবন্ধুকে আড়াই মিলিয়ন ডলারের স্বর্ণ দিয়েছিল। সেটাই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়ে শুরু করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারির সেই বিকেলে তেজগাঁও বিমানবন্দর  থেকে খোলা ট্রাকে করে বঙ্গবন্ধু তখনকার  রেসকোর্স ময়দানের দিকে এগোতে থাকেন।  তেজগাঁও থেকে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর গাড়ীর বহর পৌঁছতে সময় লেগেছিল প্রায় আড়াই থেকে তিন ঘন্টা। রাস্তায় ও আশেপাশে লোকের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল। তাই বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী ট্রাকটি পিপিলিকার মত চলছিল।
বাঙালীর মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ১০ জানুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।

 

দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বিজয় অর্জনের পর ১৯৭২ সালের এই দিনে বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ  কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে রক্তস্নাত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে আসেন।

 
জীবন-মৃত্যুর কঠিন চ্যালেঞ্জের ভয়ঙ্কর অধ্যায় পার হয়ে সারা জীবনের স্বপ্ন, সাধনা ও নেতৃত্বের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে মহান এ নেতার প্রত্যাবর্তন স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজয় পূর্ণতা পায়। এ কারণেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি একটি অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। স্বয়ং জাতির জনক তাঁর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’।

 
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়েছিলেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণার পর ২৫ শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তাানী সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। অপারেশন সার্চলাইট নামের এ অভিযানের শুরুতেই পাক হানাদাররা বাঙালীর অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানম-ির ৩২ নম্বর বাসা থেকে বন্দী করে নিয়ে যায়।  গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক  ঘোষণা দিয়ে যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু।

 
গ্রেফতার করে পাকিস্তাানের কারাগারে বন্দী করা হলেও তাঁর অনুপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর নামেই চলে মুক্তিযুদ্ধ। বাঙালী যখন প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তুলেছে, বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তানের কারাগারে প্রহসনের বিচারে ফাঁসির আসামি হিসেবে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সেলের পাশে তাঁর জন্য কবর পর্যন্ত  খোঁড়া হয়েছিল। কিন্তু বাঙালীর স্বাধীনতা, মুক্তির প্রশ্নে ফাঁসির আসামি হয়েও বঙ্গবন্ধু ছিলেন অবিচল, আপোসহীন। স্বাধীনতাকামী জনতা দীর্ঘ নয় মাস মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশকে স্বাধীন করার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতেও বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলে।

 
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে  দেশ স্বাধীন হলেও বাঙালী জাতির মনে ছিল না স্বস্তি, বিজয়ের আনন্দ। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী জাতির জনকের ভাগ্যে কি আছে এ নিয়ে এ ভূখণ্ডের প্রতিটি মানুষ ছিল বিচলিত, আতঙ্কিত। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার পর বিশ্বনেতারা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। বিশেষ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সহযোগিতা ছাড়া বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করা অসম্ভব ছিল। পরে পরাজিত পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত বন্দীদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে সসম্মানে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

 
সেদিন রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ জনতার উদ্দেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার বক্তব্যে বলেছিলেন,“ আমি জানতাম আমি আপনাদের কাছে ফিরে আসবো। আমি তাদের শুধু একবার বলেছিলাম তোমরা যদি আমাকে মেরে ফেলে দাও আমার আপত্তি নাই, মৃত্যুর পরে আমার লাশটা আমার বাঙালিদের কাছে দিও, এই একটা অনুরোধ তোমাদের কাছে। তবে মনে রাখা উচিৎ বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র, বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে, বাংলাদেশকে কেউ দাবাতে রাখতে পারবে না।

 
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,‘সাত কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি।’ কবিগুরুর এই আপেক্ষকে আমরা মোচন করেছি। বাঙালি জাতি প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তারা মানুষ,তারা প্রাণ দিতে জানে। এমন কাজ তারা করেছে যার নজির ইতিহাসে নাই।’

 
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাত্মা গান্ধীর অহিংস রাজনীতির একনিষ্ঠ অনুরাগী ছিলেন। তাঁর নিজের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে অসামপ্রদায়িক রাজনীতির দিকনির্দেশনা উল্লেখ করে বলেছেন,” দেশ বিভাগের পর কলকাতায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুর্নপ্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত থাকার সময়  সোহরাওয়ার্দী গান্ধীজীর সঙ্গে বেলিয়াঘাটার একটি জরাজীর্ণ বাড়িতে অবস্থান করিতেন। তখনও কলকাতার মুসলিম-নিধনযজ্ঞ পুরোদমে চলিতেছিল একদিন প্রায় বিশ সহস্র লোকের একটি জনতা তাঁহাকে হত্যা করিতে আসিল ।

 

কিন্তু ভয় পাওয়ার পাত্র তিনি নন। তাই, তিনিও বুক ফুলাইয়া তাহাদের সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইলেন এবং তাহাদিগকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, “তোমরা যদি আমাকে হত্যা করিতে চাও, তবে এখনই কর। কিন্তু তৎপূর্বে আমাকে এই প্রতিশ্রুতি দিতে হইবে যে, আমার পরে তোমরা আর কোন মুসলমানকে হত্যা করিবে না।”সোরগোল শুনিয়া গান্ধীজী বাহির হইয়া আসিয়া সোহরাওয়ার্দীর পাশে দাঁড়াইলেন এবং উন্মত্ত জনতাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, “তোমরা যদি শহীদকে খুন করিতে চাও, তাহা হইলে আমাকে খুন কর।”একথা জনতার ওপর যাদুমন্ত্রের ন্যায় কাজ করিল এবং তাহারা ছত্রভঙ্গ হইয়া চলিয়া  গেল। ”

 
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে জাতির সার্বিক উন্নয়নের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে গেছেন। অনেকেই বলে থাকেন বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের রাষ্ট্র পরিচালনায় একটি সদ্য যুদ্ধ বিধ্বস্ত ভঙ্গুর  দেশের অনেক উন্নয়ন সাধন করেছিলেন।

 
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে তাঁর অগাধ বিশ্বাস ছিল যে, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র প্রজাতন্ত্রের মূলনীতি। আর সেসব মুলনীতিকে সামনে নিয়ে এদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু পথ পথযাত্রা শুরু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১-এর গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আরম্ভ করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭১-এর গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধী, পরাজিত পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসররা প্রথম সুযোগে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দিয়েছিল। সংবিধান থেকে মুছে  ফেলেছিল বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও  চেতনা। বাংলাদেশকে তারা পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো  মৌলবাদী জঙ্গী রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা জানতো না যে, জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিবের জনপ্রিয়তা আরো  বেড়ে  যাবে। এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ লক্ষ মুজিবের জন্ম নেবে।  এই জনপ্রিয় স্লোগানটি বাস্তবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই বাংলাদেশের মানুষ তা  মেনে  নেয়নি। এই বাংলার মাটিতেই বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার সম্পন্ন ও কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশে আবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে, সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের  চেতনাও আংশিকভাবে পুনর্স্থাপিত হয়েছে। জামাত-শিবির ও বিএনপির সহযোগিতায়  যুদ্ধাপরাধীদের যাতে করে বিচার না করতে পারে সে চক্রান্ত করছে তারা। দেশে-বিদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করছে। যতই ষড়যন্ত্র আর লবিস্ট নিয়োগ করেও কোনো লাভ হবে না। কেননা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল শ্রেণী পেশার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। তাই এই মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার রায় কার্যকর শুরু হয়েছে। আগামীতে তা অব্যাহত থাকবে।

 
সদ্য সাবেক মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার প্রতি বাংলার গণমানুষের সমর্থন রয়েছে। কেননা মহাজোট সরকারের অন্যান্য নির্বাচনী  প্রতিশ্রুতির সাথে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার দাবিও ছিল। আর এই প্রতিশ্রুতির কারণে দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাত্তরের মানবতাবিরোধীদের বিচার কাজ শুরু করে এবং ইতোমধ্যে কসাই কাদের মোল্লার রায় কার্যকর করে নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ করেছে।

 
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুাজিবুর রহমান ১৯৭২-এর সংবিধানে ধর্মে নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন ধর্মের নামে গণহত্যার পুনরাবৃত্তি বন্ধ এবং সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ নির্মূল করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার জন্য। বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস ও আদর্শের মর্যাদাকে রক্ষা করতে হলে ’৭২- এর সংবিধানের মূলধারা অবশ্যই পুনর্স্থাপন করতে হবে। আর বাহাত্তরের সংবিধান পুনরায় ফিরে গেলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে।
পরিশেষে বলা যায় গত ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছে। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহন করার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায়  কার্যকর করেই চলেছে। এই ধারা আগামীতে অব্যাহত থাকবে। এছাড়া দেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়নমূলক প্রকল্প পদ্মা সেতু স্বপ্ন নয়, বাস্তবে দেখা মিলেছে। দেশের জনগণের টাকায় নির্মিত হচ্ছে এই সেতু। সেতুর প্রায় ৪০ ভাগ কাজ এগিয়ে চলেছে। এই সেতু বাস্তবায়নের পুরোটায় কৃতিত্বের অধিকারী এদেশের অর্থনৈতিক মুক্তিদাতা বঙ্গবন্ধু কন্যা সফল প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের মা শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মেখ হাসিনায় পিতার মতো এদেশের মানুষকে ভালবাসায় আপন করে নিয়েছেন। আগামীওে এটাই কামনা করি।

লেখক: সাবেক দফতর সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাজশাহী জেলা শাখা।