তাহেরপুর পৌরসভা হাটে কাদা পানির ভাগাড় জনগণের ভোগান্তি

এস.এম সামসুজ্জোহা মামুন, তাহেরপুর প্রতিনিধি:
রাজশাহী জেলার প্রথম শ্রেণির একটি পৌরসভা তার নাম তাহেরপুর পৌরসভা। নেই এখানে কলকারখানা, থানা ও অফিস আদালত তবুও ১ম শ্রেনির পৌরসভা হিসাবে জোরতালে চলছে কার্যক্রম। পৌর হাট-বাজারে নেই পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ফলে অল্প বৃষ্টিতেই বিভিন্ন রাস্তায় কাদা পানি জমে থাকায় এলাকার জনসাধারণের চলাচলের জন্য চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

একমাত্র ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে তাহেরপুর কলেজের যায়গায় অডিটোরিয়াম নির্মান কাজ করায় বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি নামলে ময়লা পানিতে নাজেহাল হতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। এছাড়াও বেশ কিছু পৌর এলাকার রাস্তাঘাটসহ স্কুলমাঠে ধান, আলু, ওয়াশিরহাট, মসজিদ ও বিভিন্ন ঘরবাড়িতে পর্যন্ত পানি বন্ধি হয়ে রয়েছে। মেয়র বলছে আমরা ঢাকার চেয়ে অনেক ভাল আছি। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের কী দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানে।

জলাবদ্ধতার কারণে এই দুর্ভোগকে আরো বাড়িয়েদেয় রাস্তাগুলোর বেহাল দশা। খানাখন্দের কারণে হাঁটাও দায় হরঢ পড়েছে এলাকাবাসীর। বিভিন্ন জায়গায় জমে আছে বৃষ্টির পানি। এলাকাবাসীর অভিযোগ বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভা রাজশাহী বিভাগের বাণিজ্যিক একটি ব্যবসা কেন্দ্র তাহেরপুর পৌর হাট-বাজার। এই হাট-বাজারকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে বিভিন্ন মার্কেটসহ বিপণী বিতান।

আছে বিভিন্ন ধরণের দোকান পাট। মুচি থেকে শুরু করে যে কনো পণ্যের দোকান এই তাহেরপুর পৌর হাট-বাজারে রয়েছে। রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্র এই তাহেরপুর হাট-বাজারে প্রতিদিন হাজার হাজার লোকের সমাগম হলেও নেই জনসাধারণের জন্য পর্যাপ্ত কোন সুযোগ সুবিধা। নেই পর্যাপ্ত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা। আর যেগুলো ড্রেনেজ রয়েছে নেই সেগুলোর ঠিকমত সংস্কার নাই। এবং সংস্কারের অভাবে বর্তমানে সেসব ড্রেনেজ বেহাল দশা বিরাজ করছে। তবে শ্রীপুর ইউনিয়ন থাকা কালিন তাহেরপুর হাটের মধ্যে একমাত্র ড্রেনেজ নির্মান করা ছিলো।

সে ড্রেনেজ নতুন ভাবে ২০১৫ সালে বর্তমান মেয়র টেন্ডার করিয়ে ঠিকাদারকে দিয়ে শুধুমাত্র রিপারিং করিয়ে কাজ শেষ না করেই বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা উত্তোলন করিয়েছে ঠিকাদারগণ। এ ড্রেনেজে রিংস্রেলাপতো দুরের কথা বর্তমানে হাটের ভেতর অল্প বৃষ্টিতেই ড্রেনেজ দিয়ে পানি এক ফোটা বেরচেছনা। কিন্তু গত নির্বাচনের আগে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জয়ী হলেও পরে তা বেমালুম ভুলে যান পৌরসভার মেয়র।

রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠসহ অবকাঠামোগত সব সমস্যার সমাধানের কথা বলে ভোটারদের মন জয় করেছিলেন। কিন্তু পৌরসভার ভবন, বাসটার্মিনালসহ নামমাত্র উন্নয়ন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি পৌর হাট-বাজারের। পৌরসভাকে খ শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করার পাশাপাশি রাস্তাঘাট সংস্কারের প্রতিশ্রুতি ছিল জোরাল। তিনি প্রথম শে্িরণতে উন্নীত করলেও চকিরপাড়া ২নং ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট খেলার মাঠ সংস্কারের উদ্দ্যোগ নেয়নি ৬ বছরেও। তবুও ১ম শে্িরনর পৌরসভা হিসাবে চলছে কার্যক্রম।

এছাড়া তাহেরপুর পৌরসভা ৫তম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র মেয়র আবুল কালাম আজাদ আগামীতে পৌরসভায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও ডিজিটাল পৌরসভায় রুপান্তরিত করার লহ্ম্যে ১৯-দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনা করেছেন। এর আগে তিনি তাহেরপুর দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পৌরবাসীর উদ্দেশ্যে ১৯-দফা নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণা দিয়েছেন।

এদিকে তাহেরপুর হাট-বাজারের সবজি পট্টি, মাংশ পট্টি, মুরগি পট্টি ও কাপড় পট্টি নিয়ে গড়ে উঠেছে শত শত দোকান পাট। বাজারের আশপাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন মার্কেট। এই বাজারে প্রতিদিন হাজার হাজার এবং শুক্রবার-সোমবার হাটবারে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে। অথচ এ সকল শত শত দোকান পাটের ময়লা আবর্জনা ও পানি নিস্কাশনের জন্য নেই কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এতে করে সামান্য বৃষ্টি হলেও জমে যাচ্ছে কাঁদা পানিসহ ময়লা আবর্জনা।

এতে করে হাট-বাজারের পথ দিয়ে বাজার করতে আসা জনসাধারণদের কাদা পানি দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। শুধু তাহেরপুর পৌর হাট-বাজারই নয়। এই পৌরসভার ১নং, ২নং ও ৩নং ওয়ার্ডেও বেশ কিছু রাস্তা চলাচলের উপযোগী হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে তাহেরপুর পৌর হাট-বাজারের ব্যবসায়ী সাহাগ, রতন, রাম, জব্বার, হামিদ, কাসেম, ফজলু, বারিক, মাসুদ, হেলাল, জয়দেব, কৃষনসহ শত শত ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, তাহেরপুর পৌরসভা একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা প্রতি বছর প্রায় ৯৫ থেকে এক কোটি টাকার হাট-ঘাট টেন্ডার হতে আয় হয়। তাছাড়া আমরা এই বাজারে ব্যবসা করার জন্য পৌরসভায় ঠিকমত ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ সবই দিয়ে থাকি। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ ও পৌরসভা থেকে এথন পর্যন্ত আমাদের সমস্যা দুর করার জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এছাড়াও বাজারের ব্যবসায়ীরা আরো জানান, বিভিন্ন পট্টিতে কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই এই পথে কাঁদা পানি জমে যায়। তাহেরপুর পৌরসভার হাটটি বারণই নদীর তীরঘেঁসে রয়েছে। এবিষয়ে ব্যবসায়ীরা বার বার পৌরসভার কর্তাদের বলেও কোন সমাধান পাওয়া যায়নি বলে একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন। তবে দ্রুত হাট-বাজারে বারণই নদীর সাথে সংযোগ করে ড্রেনেজ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন ভুক্ত ভুগী ব্যবসায়ীরা।

এব্যাপারে পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা ঢাকার চেয়ে অনেক ভাল আছি। তবে যে টুকু সমস্যা আছে অচিরে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে সমাধান করা হবে।

 

স/আ