তামিম ছাড়া নিহত অন্য দু’জন কে, জানার চেষ্টা চলছে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

নারায়ণগঞ্জে এক জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত তিন জনের একজন গুলশান হামলার পরিকল্পনাকারী তামিম চেৌধুরী বলে নিশ্চিত করা হলেও অপর দু’জনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায় নি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তামিম চৌধুরী নিহত হবার কথা নিশ্চিত করে বলেছেন, “অন্য দুজনের পরিচয় আমরা ইনভেস্টিগেশনের পরে জানাবো, আমরা মনে করি তামিম চৌধুরীর সবচেয়ে বড় সহযোগীই এখানে নিহত হয়েছে।”

  • এই সবচেয়ে বড় সহযোগী কে তা মন্ত্রী বলেন নি। এর আগে কল্যাণপুরে জঙ্গী আস্তানায় নিহতদের পরিচয় উদ্ধার করা হয়েছিল তাদের আঙুলের ছাপ জাতীয় ডাটাবেজে সংরক্ষিত তথ্যের সাথে মিলিয়ে। এখানেও সেরকম চেষ্টাই করা হবে এমন ইঙ্গিত দিচ্ছেন পুলিশের কিছু সূত্র।

পুলিশের কর্মকর্তারা তামিম চৌধুরীকে ‘নব্য’ জেএমবি’র সামরিক শাখার প্রধান বলে উল্লেখ করছেন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক তামিম চেৌধুরীকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ।

তার সাথে বরখাস্তকৃত একজন সামরিক কর্মকর্তা জিয়াউল হককে ধরিয়ে দেবার জন্যও পুরস্কার ঘোসণা করা হয়। বলা হয় তিনি আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে আরেকটি জঙ্গী সংগঠনের নেতা।

নারায়ণগঞ্জে সাড়ে নয়টার পর থেকে প্রায় ঘন্টাব্যাপী ঐ অভিযানের সময় বাড়িটির আশেপাশে সবাইকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়। স্থানীয়রা বলছেন, এসময় মোবাইল নেটওয়ার্কও বন্ধ পাওয়া যায়।

হিট স্ট্রং ২৭ নামের অভিযানের পর সোয়াত টিম সহ পুলিশ সদস্যরা বাড়িটিতে প্রবেশ করে। কিছু পর পুলিশের মহাপরিদর্শক ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন যে, নিহতদের একজনের সাথে তামিম চেৌধুরীর হুবহু মিল রয়েছে। তার কিছু পর ঘটনাস্থলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিশ্চিত করেন যে নিহতদের একজন তামিম চেৌধুরী।

  • মি. খান বলেন, বারবার আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে সাড়া না পাওয়ার পর অভিযান চালায় সোয়াট দলসহ পুলিশ সদস্যরা। সেই অভিযানে নিহতদের একজন তামিম চৌধুরী বলে তারা প্রমাণ পেয়েছেন।

পরবর্তীতে পুলিশের সূত্র থেকে বাড়িটির ভেতরের কিছু ছবিতেও দেখা যায় যে, মেঝেতে তামিম চেৌধুরীর মতই একজনের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে।

মি. হক বলেন, তামিম চৌধুরী ছিল নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান এবং সে সিরিয়া থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

বাড়িটি থেকে একে-২২ রাইফেলসহ কিছু হাতবোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ অভিযানের আগে জঙ্গিরা কিছু নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

  • বিকেল সোয়া ৬ টা নাগাদ নিহত তিনজনের মৃতদেহ নারায়নগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ঘটনাস্থল থেকে বাড়িটির মালিক এবং তার পরিবারের সদস্যসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানালেন, সকাল সাড়ে ন’টা একটু আগে তারা প্রথম গুলির শব্দ শোনেন। ঘন্টাখানেক ধরে প্রচুর গোলাগুলি হয়, কিচু বোমার শব্দও পাওয়া যায়, বলেন তিনি।

আরেকজন এলাকাবাসী জানান, জুলাই মাসে ও বাড়িটি ভাড়া নেয় কয়েকজন যুবক, পাড়ার লোকদের কাছে তারা নিজেদের ওষুধ কোম্পানির কমর্চারী বলে পরিচয় দেয়।

পুলিশ মহাপরিদর্শক শহিদুল হক বলেন, অভিযানের আগে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি ছোঁড়ে। জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ না করায় সকাল নাগাদ পুলিশের সোয়াত বাহিনীসহ পুলিশ সদস্যরা অভিযান শুরু করে।

এর আগে সম্প্রতি ঢাকার কল্যাণপুরে এক জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নয় জন জঙ্গি নিহত হয়।

সূত্র: বিবিসি বাংলা