তদন্তে অগ্রগতি নেই, বাবুলের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সন্দেহ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের প্রাক্তন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রীর মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নতুন কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম পুলিশ।

চট্টগ্রাম পুলিশের দাবি তারা মূল হত্যাকারী মুসাকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন; যিনি বাবুল আক্তারের সোর্স ছিলেন। তবে তাকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় তদন্ত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে না।

এদিকে মিতু হত্যায় তার স্বামী বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করছেন শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। তিনি দাবি করছেন, ওই ঘটনায় বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতা থাকার কারণেই চাকরি ছাড়তে হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। যদিও মিতু হত্যার পর মোশাররফ হোসেনের আশ্রয়ে ছিলেন বাবুল আক্তার। পরে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিনি অন্যত্র বাসা নিয়ে চলে যান বলে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে দাবি করেছিলেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় মিতুকে হত্যা করে পালিয়ে যায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত তিনজনের নামে একটি মামলা করেন। মামলাটি চট্টগ্রাম মহানগর  পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তদন্ত করছে। গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত নয়জনকে শনাক্ত করা হয়েছিল। এদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, তারা কারাগারে রয়েছেন। কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন নূরনবী ও নূরুল ইসলাম রাশেদ নামে দুজন। মামলায় অন্য দুই আসামি মুসা ও কালু পলাতক। এ ছাড়া মিতু হত্যায় যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল, তার মালিক রবিনকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশের কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে বলেন, মিতুকে হত্যার জন্য মুসাই এ পরিকল্পনা করে এবং টাকার বিনিময়ে তাদের ভাড়া করা হয়। ঘটনার দিন মুসা মিতুর মাথায় গুলি করে এবং নূরনবী তাকে ছুরিকাঘাত করে। রাশেদ, শাহজাহান ও কালু তাদের সহযোগিতা করে। অস্ত্র সরবরাহ করে ভোলা।

স্ত্রী খুন হওয়ার ১৯ দিনের মাথায় বাবুলকে ঢাকার মেরাদিয়া ভূঁইয়াপাড়ায় শ্বশুরের বাসা থেকে ডেকে নিয়ে টানা ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এর কিছু দিন পর তার চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়া নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ছয় মাস পর বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রামের ডিবি কার্যালয়ে জেরা করেন তদন্ত কর্মকর্তারা। গত ডিসেম্বরে চট্টগ্রামে তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মিতুর বাবা-মা। এ সময় তারা গণমাধ্যমের সামনে বাবুল আক্তারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

সোমবার সকালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাবুল যদি এই ঘটনায় জড়িত না থাকে তাহলে চাকরি ছাড়ল কেন?’ এক বছরেও পুলিশ মুসাকে গ্রেপ্তার করতে পারায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাবুল মনে করেছে সে বিপদ থেকে মুক্ত হয়ে গেছে। এ জন্য সন্তানদের নিয়ে আমার বাসা ছেড়ে অন্য বাসায় চলে গেছে। বাবুল আমার বাসা ছেড়ে যাওয়ার পর মানুষের কাছ থেকে শুনতে পাই একাধিক নারীর সাথে বাবুলের সম্পর্ক ছিল। সেই মিতুকে হত্যা করিয়েছে।’

বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে এ ধরনের অভিযোগ উঠছে। সঠিক প্রমাণ ছাড়া এ ধরনের অভিযোগ করা ঠিক না। মামলার তদন্ত এখনো চলছে। স্ত্রী হত্যা সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বাবুল আক্তার।

সূত্র: রাইজিংবিডি