ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনে আজ ভোট

ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হতে যাচ্ছে আজ শনিবার। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট নেওয়া হবে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিক প্রচার বন্ধ থাকলেও প্রার্থীরা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরেছেন।

দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। দলটির কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি ও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত নেতাদের চেষ্টা থাকবে বেশিসংখ্যক ভোটারকে কেন্দ্রে নিয়ে আসা।

অন্যদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, কেন্দ্র দখল ও বিনা ভোটে জিতে আসার যে বাজে সংস্কৃতি সরকারি দল চালু করেছে, সে ধারাবাহিকতা দুই আসনের উপনির্বাচনেও থাকবে বলে আশঙ্কা তাঁদের। তার পরও নির্বাচনের মাঠে থাকার প্রত্যয় জানিয়েছেন তাঁরা।

ঢাকা-৫ আসন : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা গত ৬ মে মারা যাওয়ায় শূন্য হয় আসনটি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন আওয়ামী লীগের মো. কাজী মনিরুল ইসলাম মনু ও বিএনপির সালাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী মীর আব্দুর সবুর।

কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত নেতারা  বলেছেন, শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য দলের কেন্দ্রভিত্তিক কমিটিগুলো তৎপর থাকবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোটারদেরই শুধু কেন্দ্রভিত্তিক কমিটিতে রাখা হয়েছে। তাঁরা ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসায় তৎপর থাকবেন।

৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গোলাম সারোয়ার কবীর  বলেন, ‘বিগত কয়েক দিন আমরা নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে বাড়ি বাড়ি গিয়েছি। মানুষেরা স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছে। ঢাকা-৫ আসনের প্রতিটি এলাকায় নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ যেন সম্পন্ন হয় সে জন্য সহযোগিতা করা।’

অন্যদিকে বিএনপিও শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই এই উপনির্বাচনেও ভোটের আগের দিন রাতে ভোট জালিয়াতি, দলীয় এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নির্বাচনের ফলাফল বদলে দেওয়ার ঘোর আশঙ্কা করছেন দলটির নেতারা। তাঁরা বলছেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন ও ঘোষিত ফলাফলই বলে দেয় কিভাবে বিনা ভোটে ক্ষমতাসীনরা জোর করে জয়ী হচ্ছে।

গতকাল সকালে সালাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ যাত্রাবাড়িতে তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে অবস্থান করে নির্বাচনের সর্বশেষ প্রস্তুতি তদারকি করেন। দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই আমি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে আছি ও থাকব, ইনশাআল্লাহ।’

নির্বাচনী এলাকার ১৮৭ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮৩টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে বিএনপির প্রার্থী একটি তালিকা নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে দিয়েছেন। বিএনপির প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট তানভীর আহমেদ রবিন এই তথ্য জানিয়েছেন।

নওগাঁ-৬ আসন : আত্রাই-রাণীনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-৬ আসনটি শূন্য হয় গত ২৭ জুলাই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে। এই আসনের উপনির্বাচনে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণে নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুতি নিয়েছে।

নির্বাচনের মাঠে তিনজন প্রার্থী থাকলেও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন হেলাল, ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শেখ রেজাউল ইসলাম রেজুর মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা মনে করছেন। দুই প্রার্থীর পক্ষে ভোটের পরিবেশ নিয়ে নানা অভিযোগ তুললেও সেটি রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করতে পারে—এমন কোনো পক্ষকেই ছাড় দেওয়া হবে না। পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনীয় কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ