ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত কামার বাড়ি

গোলাম রসুল, দুর্গাপুর
পবিত্র ঈদ-উল আযহাকে সমনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। দিনরাত সমান তালে ঠণ ঠণ আওয়াজে তারা হাসুয়া, ছুরি, চাপাতি, দা, বটি তৈরী ও শান দেওয়ার কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন।

বলছিলাম রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার কথা। গতকাল বুধবার এলাকার হটের দিকে গিয়ে এমন চিত্র চোখে পরে।

কোরবানী ঈদ যতই এগিয়ে আসছে ততই যেত ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন কামা ও ক্রেতারা। ক্রেতারা তাদের পছন্দের হাসুয়া, ছুরি, চাপাতি, ভোজালী, কুড়াল, মাংস কাটার জন্য গাছের গুলের টুকরো কিনার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে বিগত সময়ের তুলনায় এসব সরঞ্জামাধির দাম একটু বেড়েছে।

উপজেলর বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কামাররা। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঠণ,ঠণ আওয়াজে কাজ করে চলেছেন তারা। অনেকের হাতে বেশি অর্ডার থাকায় নতুন কোন অর্ডারও নিচ্ছেনা। সারা বছর কাজ না থাকলেও  কোরবানীর ঈদের এ সময়টা বরাবরই ব্যাস্ত থাকতে হয় তাদের।

পশু জবাইর সরঞ্জামাদি কিনতেও লোকজন ভীড় করছেন তাদের দোকানে। কামারের দোকান গুলোতে শোভা পাচ্ছে গরু, ছাগলসহ বিভিন্ন পশু জবাইয়ের  উপকরণ। প্রতি বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে হাসুয়া, দা, ছুরি, চাপাতি, ও ধামার ব্যাপক চাহিদা বেড়ে যায়।

দুর্গাপুর পৌরসভা এলাকার কামার বলরাম কর্মকার ও বাবলু কর্মকার জানান, সারা বছর কাজ খুব কম থাকে কোরবানি এলে কাজ বেড়ে যায়। বর্তমানে ছোট ছুরি থেকে শুরু করে বড় ছুরি ও ধামার সান দেয়ার জন্য ৩০টাকা থেকে শুরুকরে কাজের গুণাগুণের ভিত্তি করে ৪০ থেকে ৭০টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি দা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০শ’ টাকা, হাসুয়া ১৮০টাকা, ছোট ছুরি ৫০টাকা, বটি ২০০শ’ টাকা, চাপাতি ২৫০-৪০০ টাকা করে।

দুর্গাপুর বাজারে পশু জবাইয়ের ছুরি কিনতে আসা বহরমপুর গ্রামের আল-আমিন,সিংগা গ্রামের ওয়াজ নবী, মাহাবুর রহমান ভুলুসহ কয়েকজন ক্রেতা জানান, কোরবানীর ঈদের আর মাত্র দেড় সপ্তাহ বাকী তাই আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কিনার কাজটি সেরে ফেলছেন। তবে অন্যান বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, চাপাতির দাম একটু বেশী বলে জানান তারা। লোহার পাশাপাশি এদিকে স্টিলের ছুরি চাকুও লোকজনকে আকৃষ্ট করছে।

কানপাড়া বাজার এলাকার শাণ দেওয়া কামার জানায়, দা- ছুরি অনুযায়ী ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে। তবে ঈদ ছাড়া অন্য সময় একটু কম রাখা হয় বলে স্বীকার করেন তিনি। এদিকে যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাণ দেন তাদের অবস্থা মোটামুটি ভাল বলে জানাগেছে। যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করেন তাদের একজনের সাথে কথা বলে জানাগেছে তাদের কমবেশি সারা বছরই কাজ থাকে।

কারণ মহিলাদেরতো সারা বছরই হাসুয়া, দা- ছুরি দিয়ে কাজ করতে হয়। এদিকে নতুন সঞ্জামাধি কেনা ও মেরামত করার একটু বেশি মূল্যের ধরার বিষয়ে কামার দোকানিদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, বর্তমানে কয়লা ও রডের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদেরও মূল্য একটু বৃদ্ধি করতে হয়েছে।

স/আ