ট্রাম্প শিবিরে সৌদি-আমিরাতের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

২০১৬ সালের আগস্টে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পের ছেলে দেখা করেছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের দুই ক্রাউন প্রিন্সের এক দূতের সঙ্গে। এই দূত ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী জয়ে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এরপরই জর্জ নাদের নামে ওই দূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র। এ খবর দিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। খবরে বলা হয়, ট্রাম্প টাওয়ারে অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে ট্রাম্প জুনিয়রকে লেবানিজ আমেরিকান ব্যবসায়ী জর্ন নাদের বলেন, সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্সদ্বয় ডনাল্ড ট্রাম্পকে সহায়তা করতে আগ্রহী। ওই বৈঠক হয়েছিল বিতর্কিত প্রাইভেট মিলিটারি প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকওয়াটারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন প্রধান এরিক প্রিন্সের মধ্যস্থতায়।

রাশিয়ার বাইরেও যে অন্যান্য দেশ ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারাভিযানে প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল, তার প্রথম প্রমাণ হতে পারে এই বৈঠক। ওই বৈঠক সম্পর্কে জানেন এমন একাধিক সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বৈঠকে আরও উপস্থিতি ছিলেন একটি ইসরাইলি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা জোয়েল জামেল। ট্রাম্প জুনিয়রের আইনজীবী অ্যালান ফুতেরফাস শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ওই বৈঠকে কিছুই ঘটেনি। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে এরিক প্রিন্স, জর্জ নাদের ও জোয়েল জামেল নামে আরেক ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠকের কথা স্মরণ করতে পারেন ট্রাম্প জুনিয়র। তারা ট্রাম্প জুনিয়রকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা মার্কেটিং কৌশল নিয়ে একটি প্রস্তাব দেন। তবে তিনি এ নিয়ে আগ্রহী ছিলেন না। এরপরই ওই বৈঠক শেষ হয়। জর্জ নাদেরের আইনজীবী ক্যাথরিন রুয়েমলার বলেন, ‘জর্জ নাদের বিশেষ কৌঁসুলির তদন্তে সম্পূর্ণরূপে সহযোগিতা করেছেন এবং করা অব্যাহত রাখবেন।’ ১৯৭৪ সালের পর রাজনৈতিক প্রচারণায় বিদেশী নাগরিকদের অর্থ প্রদান নিষিদ্ধ করা হয় আমেরিকায়। এরপর আমেরিকান রাজনৈতিক দলেও বিদেশী অনুদান নিষিদ্ধ করা হয়। এ সংক্রান্ত আইনে বিদেশী নাগরিকদের সঙ্গে কোনো প্রার্থীর প্রচার শিবিরের সমন্বয় এবং কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিদেশী নাগরিকদের অর্থে বিজ্ঞাপন প্রচারও নিষিদ্ধ করা হয়।
মার্কিন নির্বাচনে সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের এই প্রভাব বিস্তারের খবর এমন সময়ে এলো যখন ট্রাম্প জুনিয়রের সঙ্গে এক রাশিয়ান আইনজীবীর সাক্ষাৎ নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই রাশিয়ান আইনজীবী ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করতেই দু’জনের সাক্ষাৎ হয়েছিল।
গত মাসে আরেক মার্কিন পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, মার্কিন বিশেষ কাউন্সেল রবার্ট মুলারের কিছু তদন্তকারী ইসরাইলি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রধান জোয়েল জামেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। জর্জ নাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক নিয়ে জোয়েল জামেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
রবার্ট মুলার মূলত মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্ত করছিলেন। মস্কোর সঙ্গে ট্রাম্প শিবিরের কোনো সম্পর্ক ছিল না কিনা সেটিও তদন্তের আওতায় ছিল। পরবর্তীতে ওই তদন্ত পরিচালনায় ট্রাম্প বাধা দিয়েছেন কিনা, সেটিও মুলারের তদন্তের আওতায় অন্তর্ভূক্ত হয়। ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে কোনো ধরণের যোগাযোগ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।