ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই বাণিজ্য চুক্তি করতে পারেন মে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রথম বিদেশি নেতা হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এ দুই নেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দুই নেতার প্রথম বৈঠকেই আসতে পারে বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা।

 

উল্লেখ্য, সদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার বিরোধী ছিলেন। ব্রেক্সিটের বিপক্ষে তিনি যুক্তরাজ্য সফরে প্রচারণাও চালিয়েছিলেন। অপরদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেক্সিটের সমর্থক এবং তিনি একাধিক বক্তব্যে ব্রিটেনের সঙ্গে পৃথক চুক্তি করতেও আগ্রহী বলেও জানিয়েছেন।

 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুসংহত করার প্রয়াস হিসেবেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এই বৈঠক যে কেবল ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ থাকছে না, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। নারী, মেক্সিকোর অভিবাসী ইস্যু, মুসলিম ইস্যু, ন্যাটো এবং তার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ‘সবার আগে আমেরিকা’ নিয়ে ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রাধান্য পেতে পারে।

 

বৈঠকে একটি ব্রেক্সিট-পরবর্তী মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিকে থেরেসা মে তার আলোচ্যসূচির শীর্ষে রেখেছেন বলে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো। ট্রাম্পের দিক থেকেও এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

দুই নেতার সাক্ষাৎকার এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন ট্রাম্প জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্যাতনমূলক পদ্ধতি পুনরায় চালু করার কথা ঘোষণা করেছেন। অবশ্য এসব ক্ষেত্রে থেরেসা মে তার সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন।

 

চাথাম হাউসের আমেরিকান প্রোগ্রামের সহযোগী ফেলো লেসলি ভিনজামুরি বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরকে শুধুমাত্র প্রতিকী গুরুত্বপূর্ণ বলে ছোট করতে চাই না। তবে এ সফর পশ্চিমা ও অন্যান্য দেশ এবং ইউরোপের দেশগুলোর কাছে এক ভিন্ন বার্তা বহন করছে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম বৈঠকে অনেক কিছুই আলোচনা হবে তবে কোনও প্রধান ইস্যু থাকবে না।’ তবে বৈঠকে দুই দেশের ‘বিশেষ সম্পর্ক’, ন্যাটো, বিশ্ব মুক্ত বাণিজ্য, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বে নারীদের অধিকার নিয়ে আলোচনা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

এর আগে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসার পক্ষে অর্থাৎ ব্রেক্সিটের পক্ষে ব্রিটিশ জনগণ যে রায় দিয়েছিলেন তাতে স্বীকৃতি দিয়েছেন ট্রাম্প। ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প জয় পাওয়ার পর থেকেই তার অন্তর্বর্তী দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে থেরেসা মে-কে খানিক বেগ পেতে হয়েছিল। দায়িত্বগ্রহণের পর ট্রাম্প যেন প্রথম থেরেসা মে এর সঙ্গেই বৈঠক করেন সে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছিল। ডিসেম্বরে থেরেসা মে-র জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ নিক টিমোথি এবং ফিওনা হিল যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন এবং ট্রাম্পের অন্তর্বর্তীকালীন উপদেষ্টাদের সঙ্গে দেখা করেন।

 

ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে নিজের অবস্থান সঙ্ঘত করার ক্ষেত্রে এই বৈঠকটি থেরেসা মে-র জন্য ‘রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকরা।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন