ট্রাফিক জ্যামের ভয়াবহ ১০ শহর

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রতিদিন সকাল আর সন্ধ্যায় কী খান? ডাক্তার জানতে চাইলেন রোগীর কাছে। রোগীর উত্তর, ‘আর কিছু থাক না থাক, জ্যাম তো থাকেই!’ এটা কৌতুক নয়, ঢাকাবাসীর নিদারুণ বাস্তবতা। পাঁউরুটিতে জ্যাম-জেলি নাও থাকতে পারে, জ্যাম সবার জন্যই বরাদ্দ। যদি তিনি অফিসযাত্রীদের একজন হন।

ঢাকা শহরে জ্যাম আসলেই কতটা ভয়াবহ তা অন্য শহর দিয়ে ঠিকমতো তুলনা করা গেল না। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাদের ওয়েবসাইটে বিশ্বের ভয়াবহ জ্যামের শহরের তালিকা দিয়েছে। এ নিয়ে গবেষণা করেছে ইনরিক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ট্রাফিক স্কোরকার্ড প্রকাশের জন্য বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানটি ২০১৬ সালে ৩৮টি দেশের ১ হাজার ৬৪টি শহরের ওপর গবেষণা চালিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা শহর ছিল না। ফলে বাকিদের তুলনায় ঢাকা শহর কোথায় অবস্থান করছে, তা জানা যাচ্ছে না।
তবে গত জুলাইয়ে বিশ্বব্যাংক একটি গবেষণা প্রকাশ করেছিল। তাতে বলা হয়, যানজটের কারণে রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে বছরে যে আর্থিক ক্ষতি হয়, অঙ্কের হিসাবে তা প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এই শহরে এখন ঘণ্টায় গড়ে প্রায় সাত কিলোমিটার গতিতে চলছে যানবাহন। বিশ্বব্যাংক বলছে, এভাবে চলতে থাকলে আর কিছুদিন পর হেঁটেই গাড়ির আগে যেতে পারবে মানুষ। যানজটের পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। যানবাহনের পরিমাণ যদি একই হারে বাড়তে থাকে এবং তা নিরসনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে ২০২৫ সালে এই শহরে যানবাহনের গতি হবে ঘণ্টায় চার কিলোমিটার, যা মানুষের হাঁটার গতির চেয়ে কম। মানুষের হাঁটার গড় গতি ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার বলে মনে করা হয়।

এখান থেকে ইনরিক্সের ইনডেস্কের তুলনা করা যায়। তাদের হিসাব বলছে, গত বছর ট্রাফিক জ্যামে বড় শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ধীর গতির শহর ছিল ডাবলিন। এখানে ট্রাফিক জ্যামে গাড়ির গড় গতি থাকে ৭.৫ কিলোমিটার, সবচেয়ে ব্যস্ত সময়ে যেটি সর্বনিম্ন ৫.৫ কিমিতে নেমে আসে। ডাবলিনের চেয়ে ঢাকার অবস্থা খুব একটা সুবিধাজনক তো নয়ই! অবশ্য সবচেয়ে ধীর গতির শহর হচ্ছে মেক্সিকোর ওয়াক্সাকা। ৫.৯ কিলোমিটার গড় গতি থাকে যানবাহনের। হেঁটে যাওয়াই ভালো!

ইনরিক্সের গবেষণায় দেখা গেছে, ট্রাফিক জ্যামের কারণে গত বছর লন্ডনের প্রতি চালক ১ হাজার ৯১১ পাউন্ড ক্ষতির মুখে পড়েছেন। পুরো শহরে যেটি ৬০০ কোটি পাউন্ড বা ৬৫ হাজার কোটি টাকা। ঢাকার ক্ষতির পরিমাণের দ্বিগুণ। 
ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকার সময় হিসেব করলে সবচেয়ে ভয়াবহ শহর লস অ্যাঞ্জেলেস। গত বছর এই শহরের যাত্রীদের ১০০ ঘণ্টারও বেশি সময় জ্যামে আটকে থাকতে হয়েছিল। থাকায় যাত্রীদের গড়ে বছরে কত ঘণ্টা জ্যামে বসে থাকতে হয়, তার নির্দিষ্ট হিসাব নেই। সবচেয়ে বেশিক্ষণ জ্যামে আটকে থাকতে হয় এই হিসাবে ইনরিক্সের তালিকার সবচেয়ে ভয়াবহ ১০ শহরের তালিকা দেখুন। এতে ঢাকার নাম না থাকার একমাত্র কারণ হবে পারে গবেষণার অভাব। ইনরিক্সের ট্রাফিক গবেষকদের জন্য ঢাকা যে একটা সোনার খনি, তা তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে! সূত্র: ইনরিক্স, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম।