ট্রাকের ধাক্কায় বাইক থেকে ছিটকে পড়েন আশা, মাথার ওপর দিয়ে চলে যায় চাকা

মোটরসাইকেলে ঢাকায় ফিরছিলেন অভিনেত্রী আশা চৌধুরী। রাতে দারুস সালাম এলাকায় হঠাৎ একটি ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান আশা। এই ভয়াবহ দৃশ্যটি রেকর্ড হয়ে যায় পেছনে থাকা একটি প্রাইভেটকারের স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরায়।

ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। দেখা গেছে, মোড় ঘোরার জন্য আশাদের মোটরসাইকেলটি অপেক্ষা করছিল একটি পিকআপ ভ্যানের পেছনে। তখন তাদের পেছন থেকে আসা একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে করে মোটরসাইকেলের চালক ছিটকে ডানে পড়ে যান। আর অভিনেত্রী আশা বাঁ পাশে প্রায় ২০ ফুট দূরে পড়েন। বাইকচালক উঠে দৌড়ে যান আশার কাছে। গিয়ে দেখেন, ট্রাকটির চাকা ততক্ষণে আশার মুখের কিছু অংশ থেঁতলে দিয়ে দ্রুত চলে গেছে।

এর কিছুক্ষণ পরই সেখানে পুলিশ যায়। তারা আশাকে নিয়ে যায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন আশা।

পুলিশ কর্মকর্তা ও স্বজনরা বলছেন, এক আত্মীয়ের সঙ্গে মোটরসাইকেলে বাসায় ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে সেখানে চাপা পড়েন আশা। এরপর পুলিশের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আশা পাবনার আবুল কালামের মেয়ে। চার বোনের মধ্যে আশা সবার বড়। রাজধানীতে থাকতেন রূপনগর আবাসিক এলাকার ২০ নম্বর রোডের ৩৭ নম্বর বাসায়। আশা ইডেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউবিটি) আইন বিষয়ে লেখাপড়া করছিলেন (সপ্তম সেমিস্টার)। সর্বশেষ তিনি রুমান রুনি পরিচালিত ‘দ্য রিভেঞ্জ’ নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন।

দারুস সালাম থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এক আত্মীয়ের মোটরসাইকেলে রূপনগরের বাসায় ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় আশা পড়ে গিয়ে চাপা পড়েন। মোটরসাইকেল যিনি চালাচ্ছিলেন তাঁর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আশার পরিবারের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়নি। লাশ দাফন শেষে তারা এসে মামলা করলে খতিয়ে দেখা হবে।’

স্বজনরা জানান, রাতে বোর্ডবাজার এলাকা থেকে নিজেদের নির্মাণাধীন বাসার কাজ দেখভাল শেষে রূপনগরের বাসায় ফিরছিলেন আশা। তরুণ এই অভিনেত্রী মারা যাওয়ার দুই দিন আগে গত শুক্রবার ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। নাটকে তাঁর সহশিল্পী ছিলেন সালাহউদ্দিন লাভলু ও আনিসুর রহমান মিলন। নাটকটির নির্মাতা রোমান রুনি আশার মৃত্যুর খবর পেয়ে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ছুটে যান।

সূত্র: কালের কন্ঠ