টেস্ট ব্যাটিং শেখালেন কামরুল

সিল্কসিটিনিউজ ক্রীড়া ডেস্ক:

বিরাট কোহলিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারতেন কামরুল ইসলাম। বলতে পারতেন,‘আমাকে আউট করে দেখাও, তাহলে বুঝব তোমরা টেস্টের নম্বর ওয়ান টিম।’ আত্মবিশ্বাস তো কামরুলের ছিলই। কী জন্য বললেন না!

পাড়ার ক্রিকেটে একটি রীতির প্রচলন আছে, ‘লাস্ট ম্যান’! অর্থাৎ শেষ জুটির একজন আউট হওয়ার পর ‘লাস্ট ম্যান’ বা শেষ ব্যাটসম্যানকেও আউট করতে হবে বোলারদের। বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে এ রীতি ফিরিয়ে আনা উচিত ছিল! তাহলে ড্র হতো বাংলাদেশ-ভারত ঐতিহাসিক টেস্ট!কারণ কামরুল ইসলামকে তো আউট করতে পারেনি ভারত। দুই ইনিংসে ১০ উইকেট করে নিয়েছে ভারত। দুই ইনিংসেই অপরাজিত কামরুল। প্রথম ইনিংসে ১০ বলে শূন্য এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৭০ বলে ৩!

টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে মাথা তুলে দাঁড়ান কামরুল। কী অসাধারণ ব্যাটিংই না করলেন নয়ে নামা কামরুল। চোখের সামনে স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজকে আউট হতে দেখেছেন। তাইজুলকে দেখেছেন বাজে শট খেলতে। নড়বড়ে তাসকিনকেও দেখেছেন। ‍কিন্তু বিচলিত হননি। ভুবনেশ্বর কুমার, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, উমেশ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজাদের একের পর এক আক্রমণ অনায়েসে সামলেছেন কামরুল।

ধারাভাষ্যকার সঞ্জয়মাঞ্জারেকার, আতাহার আলী খান, সুনীল গাভাস্কার থেকে শুরু করে রবী শাস্ত্রী পর্যন্ত তার ব্যাটিং টেকনিকের প্রশংসা করেছেন। শেষ পর্যন্ত বল দেখা, বলের ফলো থ্রুতে ব্যাট চালানো, ডাক করা এবং সলিড ডিফেন্সের জন্য নজর কেড়েছেন। শুধু ভারতের বিপক্ষেই না, কিছুদিন আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতেও এ ধরণের ব্যাটিং করেছেন। শেষ প্রান্তে লড়াই করেছেন। দেশেফিরে তাকে এ কথাও শুনতে হয়েছিল,‘আপনি বোলিং করেন কেন? ব্যাটিংয়ে মনোযোগী হন।’

সোমবার ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম রান নিলেন ২৯তম বলে। অশ্বিনের বলে কাট করে পয়েন্টে ঠেলে দিয়ে ২ রান। পরের রানটি নিলেনআরো ৩১ বল খেলার পর। এর আগে রান নেওয়ার কোনো চেষ্টা করলেন না। কেনই বা করবেন। জানেন একটু ভুলের বড় খেসারত দিতে হবে তাকে, দলকে। সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম সেট হয়ে নিজেদের উইকেট খুইয়েছেন অযাচিত শট খেলে। কামরুল সেখানে ভিন্ন। ধৈর্য্যরপ্রতীকহয়েশেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতেন। কিন্তু সতীর্থের অভাবে পারেননি। ‘লাস্ট ম্যান’ রীতি থাকলে ভিন্ন কিছু হতেও পারত!

সূত্র: রাইজিংবিডি