রবিবার , ১০ জুন ২০১৮ | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

টেকনাফের জনপ্রতিনিধিরা উধাও

Paris
জুন ১০, ২০১৮ ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: কেউ জনপ্রতিনিধি হয়ে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়েছে, আবার কেউবা ইয়াবার টাকার জোরে বসে গেছেন জনপ্রতিনিধির চেয়ারে। এমন অভিযোগের তালিকায় রয়েছেন সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে ইউপি সদস্য পর্যন্ত। মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর থেকে এই জনপ্রতিনিধিরা  এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ জনগণ।

এদিকে, রাষ্ট্রীয় পাঁচটি সংস্থার সমন্বয়ে মাদক ব্যবসায়ী ও পৃষ্ঠপোষকদের একটি তালিকা তৈরি করেছে সরকার। সেই তালিকায় মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন একজন সংসদ সদস্যের নাম। তিনি ছাড়া তালিকায় থাকা অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা রয়েছে আত্মগোপনে।

তালিকায় জনপ্রতিনিধিরা

টেকনাফ উপজেলায় রয়েছে ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। ইয়াবার তালিকায় এসব ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩০ জনের মতো জনপ্রতিনিধির নাম রয়েছে । তবে আগে থেকে দাবি করে আসছে যে, ‘তারা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে তালিকায় তাদের নাম দেওয়া হয়েছে।’  তালিকায় থাকা জনপ্রতিনিধিরা হচ্ছে—  টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ (বর্তমানে সৌদি আরবে), উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন, সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান শাহজান মিয়া, একই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও দুই নম্বর  ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আবদুল্লাহ, চার নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজমুল্লাহ, পাঁচ নম্বর  ওয়ার্ডের কাউন্সিলর  হামিদ হোসেন ওরফে হামিদ ডাকাত, সাত  নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর  মো. হামজালাল, আট  নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক, সাবরাং ইউপির চেয়ারম্যান নূর হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান হামিদুর রহমান, প্যানল চেয়ারম্যান শামসুল আলম, এক  নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোয়াজ্জেম হোসেন দানু, নয়াপাড়ার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহাম্মুদুর রহমান, হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব মেম্বার, বাহারছড়ার ইউপি চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন।

উখিয়ায় হ্নীলা ইউনিয়নের সাত নম্বর ইউপি সদস্য জামাল হোসেন, একই ইউনিয়নের আট  নম্বর ইউপি সদস্য নুরুল হুদা,  ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য  মোহাম্মদ আলী, তিন নম্বর ওয়ার্ডের শামসুল আলম ওরফে বাবুল, মহিলা মেম্বার (৭,৮,৯ ওয়ার্ড)  মরজিনা আক্তার, একই ইউনিয়নের মহিলা (১,২,৪ ওয়ার্ড) মেম্বার আনোয়ারা ছিদ্দিকা। এই দুই নারী জনপ্রতিনিধি ইয়াবাসহ আটকও হয়েছিল। এছাড়া, তালিকায় আছে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাকিব আহমেদ, এক  নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজুল মোস্তফা ওরফে লালু, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আলম (ইয়াবাসহ আটক হয়েছিল), টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল চেয়াররম্যান (সাত সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর) ও সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাই মুজিবুর রহমান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুর বশর নুরসাদ ও এক  নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহ আলম, পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের রেজাউল করিম মানিক, চার নম্বর ওয়ার্ডে রকাউন্সিলর মো. হোসেন, সাবেক কাউন্সিলর হাজি মো. ইউনুছ।  এরা কেউই বর্তমানে এলাকায় নেই, মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে তারা এলাকা ছেড়ে পারিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

নাম না বলার শর্তে স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, অনেকে ইয়াবার টাকায় জনপ্রতিনিধি হয়েছে। আবার কেউ কেউ জনপ্রতিনিধি হয়ে ইয়াবার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। এভাবে মাদকের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিরা জড়িয়ে পড়াটা এই এলাকার জন্য অশনি সংকেত হয়ে দাড়িছে। প্রকৃত পক্ষে যারা ইয়াবা পাচার ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একটি দাফতরিক কাজে দুই দিন ধরে উপজেলা কার্যালয়ে ঘুরে কোনও জনপ্রতিনিধিকে পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

টেকনাফ উপজেলার প্রশাসনিক একটি সূত্র জানায়, গত ৩০ মে টেকনাফে ‘চোরাচালানবিরোধী’ সভায় দুজন জনপ্রতিনিধি ছাড়া অন্যরা কেউ উপস্থিত ছিল না।যদিও সভায় সব জনপ্রতিনিধির উপস্থিত থাকার কথা ছিল। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা নির্বাহী র (ইউএনও) কার্যালয়ে মাসিক ‘চোরাচালানবিরোধী’ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমা সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহেরা বেগম, বিজিবির প্রতিনিধি মো. নজরুল ইসলাম, কোস্টগার্ডের প্রতিনিধি এম আনোয়ারুল ইসলাম, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর টেকনাফের পরির্শক মো. মোশারফ হোসেন, কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম, হোয়াইক্যং ইউপির চেয়ারম্যান নূর আহমদ আনোয়ারী, হ্নীলার প্যানেল চেয়ারম্যান ও ছয় নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সভাপতি জহির হোসেন, শাহ পরীর দ্বীপ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শাখার সভাপতি সোনা আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সরকারি এক কর্মকর্তা জানান, সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ায় তালিকাভুক্তরা আড়ালে চলে গেছে।  এছাড়া, টেকনাফের বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধির নাম মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকায় থাকায় ভয়ে তারা হয়তো এলাকা ছেড়ে গেছে। আবার অনেকে দেশের বাইরে অবস্থান করছে। এতে স্থানীয় জনগণ ভোগান্তিতে পড়েছেন। এলাকার উন্নয়নমূলক কাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান জানান, এই মুহূর্তে বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি অনুপস্থিত রয়েছে। ফলে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে বাধার সৃষ্টি হতে পারে। তবে কোনও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে যদি প্যানেল চেয়ারম্যান আর্থিক লেনদেন করতে পারে, সে ক্ষেত্রে আর বাধা হবে না।

 

বাংলাট্রিবিউন

সর্বশেষ - অপরাধ ও দুর্নীতি