টিকা নিয়েও লুটপাটের আয়োজন চলছে: বিএনপি

টিকা নিয়েও লুটপাটের আয়োজন চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একদিকে গণতন্ত্রকে ধবংস করা হয়েছে, অর্থনীতি লুটপাট করা হয়েছে। অন্যদিকে কোভিড ভাইরাস যখন গোটা বিশ্বের ব্যবস্থাকে পাল্টে দিচ্ছে, তখন সরকারি মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীরা টিকা নিয়েও একটা লুটপাটের আয়োজন করছেন।

সোমবার বিকালে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত সরকারের ক্ষমতা দখলের দিনটিকে ‘কালো দিবস’ দিবস হিসেবে পালনে বিএনপির উদ্যোগে ‘এক এগারো: বিরাজনীতিকরণের ধারাবাহিকতায় চলমান ফ্যাসিবাদ: গণতন্ত্রই মুক্তির পথ’ শীর্ষক এই সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে সেই শক্তির মদদপুষ্ট হয়েই আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে সম্পূর্ণভাবে ভোটারবিহীন বিনা ভোটের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তাদেরকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয়। আমরা এটাও জানি যে, ২০১৮ সালে একই কায়দায় আগের রাতেই জনগণের ভোটের অধিকারকে চুরি করে, হরণ করে নিয়ে গিয়ে আবার একটি সেই অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়। বাংলাদেশের আত্মা হচ্ছে গণতন্ত্র। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সেই গণতন্ত্রকে তারা ধবংস করে দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের লুটপাটের যে অর্থনীতি এটাকে পরিবর্তন করতে চাই। আমরা বাংলাদেশের একদলীয় শাসনব্যবস্থা ধবংস করে দিয়ে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সত্যিকার অর্থেই সাধারণ মানুষের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিতে চাই। সত্যিকার অর্থেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে পরাজিত করতে বাধ্য করবে।

১/১১ এর ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখে যে অভ্যুত্থান-এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ব্যাপার ছিল না। তা ছিল বাংলাদেশের সত্যিকার অর্থেই দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক শক্তিকে নির্মূল করার জন্যই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের একটি অংশ।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ১/১১‘র যে তাণ্ডব, বিরাজনীতিকরণ তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত্র হয়েছেন, সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ তার পরিবার। ১/১১‘র ওরা চেষ্টা করছে নানাভাবে ম্যাডামকে রাজি করাতে। কিন্তু ম্যাডাম কোনো অবস্থাতেই সংবিধানের বাইরে অথবা গণতন্ত্রের প্রশ্নে মাথা নত করেন নাই। সেকারণে আজকে দুর্ভোগ, আজকে তিনি গৃহবন্দি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে ২০২১ সালেই গণতন্ত্র আবার ফিরে আসবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। একই সঙ্গে ১/১১ মতো যেন আগামীতে দলের মধ্যে যাতে ‘দ্বিধা-বিভক্তি’ না হয় সেজন্য সকল নেতাদের স্মরণ করিয়ে দেন গয়েশ্বর।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,  ১/১১ সরকার গণতন্ত্র হত্যা করেছে। দুই বছর থেকে ওরা হাতে ধরে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে গেছে। তার ধারাবাহিকতায় আজকে পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। তারা এক দলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে, সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে।

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ২০০৭ সালের ১/১১ হলো একটা কালো দিন, একটা অভিশপ্ত দিবস। এটা শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্য নয়, সারা বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক মানুষের মুখে চুনকালি দেয়া হয়েছে যারা গণতন্ত্র ভালোবাসে।

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান।

 

সুত্রঃ যুগান্তর