টিউশনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন প্রতারকরা, অভিযোগ শতাধিক রাবি শিক্ষার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন দেওয়ার নাম করে প্রতারকরা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী এমন অভিযোগ করেছেন। তাদের অধিকাংশই প্রথমবর্ষে থাকা অবস্থায় প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষানগরী রাজশাহীতে রাবির পাশাপাশি রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজসহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের লক্ষাধিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে একটা টিউশন পেতে রাবি শিক্ষার্থীদের রীতিমত যুদ্ধ করা লাগে। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে প্রতারকরা। তারা দামি টিউশনের প্রলোভন দেখিয়ে সহজেই শিক্ষার্থীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশত শিক্ষার্থী প্রতারণার শিকার হন। কিন্তু বন্ধু-বান্ধবদের কাছে হীন হওয়ার ভয়ে ভুক্তভোগীরা বিষয়টিকে গোপন রাখেন। এক্ষেত্রে প্রতারকরা ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ ও গ্রুফ খুলে বিভিন্ন ধরনের টিউশনের বিজ্ঞাপন দেন। এসব বিজ্ঞাপন দেখে শিক্ষার্থীরা তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে টিউশন পেতে দুই থেকে তিনশত টাকা দিয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করেন। কিন্তু নিবন্ধনের পর টিউশন পান না বেশিরভাগই। পরবর্তীতে নিবন্ধনের টাকা ফেরত চাইলে প্রতারকরা ভুক্তভোগীদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

এরকমই এক ফেসবুক গ্রুপে টিউশনের জন্য নিবন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিলা। তিনি বলেন, ”রাজশাহী হোম টিউশন নামের একটি গ্রুপে হয়েছি। ২৫০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করতে বলেছিলো, করেছিলাম। কিন্তু এরপর থেকে ওদের কোন জবাব নেই। এমনকি মেসেজও দেখে না।”

ভুক্তভোগী রাবি শিক্ষার্থী সোনিয়া বলেন, ”রাজশাহীতে টিউশনের হাহাকার। তাই অনেকে বাছ-বিচার না করে সামনে আগায়, টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করে। আমিও প্রতারিত হয়েছি, থানায় গিয়েও প্রতিকার পাইনি। তারা বললো (থানা পুলিশ) আমার ভুল হয়েছে, আগে কেনো টাকা দিয়েছি।”

আইন বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৯ সালে রাজশাহী টিউশন ফোরামে রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করেছিলাম। কিন্তু কোনো টিউশনও পাইনি, টাকাও পাইনি। এছাড়াও ‘মিজান নাইটাঙ্গেল’ নামের পেজে টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছি কিন্তু টিউশন পাইনি। কয়েকবার তার অফিসে গিয়েছি, অনেক খারাপ ব্যবহারও করেছে।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এরকম কিছু অনলাইন পেজ ও গ্রুপ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগ পেজ ও টিউশনের দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নেন। কিছু কিছু পেজ ও গ্রুপ নিবন্ধনের পর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেন। এক্ষেত্রে পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই শুধু টিউশন পান। বাকিরা টিউশন নিবন্ধনের টাকা ফেরত পান না।

এ বিষয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নুর বলেন, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সচেতন হতে হবে। একমাত্র সচেতনতাই পারে এ ধরনের প্রতারণা রুখতে।

জি/আর