রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠানের প্রতারণায় বিপাকে ৩০ শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি:
বিএসসি শাখার নবায়ন ফি জমা না দেয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধীনস্থ ইউনাইটেড টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) কোর্সের ৩০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারছেন না। ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেনি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের নামে কোনো প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়নি। ইনস্টিটিউট ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসানের এমন কর্মকাণ্ডে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ওই শিক্ষার্থীরা। মেহেদী হাসানের নামে বিভিন্ন জনকে চাকরি দেয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে।

রাবির কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক এম. মজিবুর রহমান বলেন, ‘ইনস্টিটিউটটি গত তিন বছর বিএসসি শাখার কোনো নবায়ন ফি জমা দেয়নি। তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করালেও রেজিস্ট্রেশন করেনি। ফলে তাদের পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর পবা উপজেলা উপজেলা পরিষদের দক্ষিণে ইনস্টিটিউটটি অবস্থিত। ইনস্টিটিউটে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ৮ জন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) ৭ জন ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ১৫ জন ভর্তি হয়। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ভর্তি বাবদ ১০ হাজার, সেমিস্টার ফি ২০ হাজার টাকা এবং পরীক্ষার ফি বাবদ ৫ হাজারসহ প্রায় ৪০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। নিয়মিত ক্লাসও নেওয়া হয়। অথচ রাবির কলেজ পরিদর্শক দপ্তরে বিএসসি শাখার নবায়ন ফি দেওয়া হয়নি। ফলে হয়নি শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন। গত ২৭ জুন থেকে রাবির অধীনস্থ অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটগুলোর একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তাই গত ২ জুলাই রাবির কলেজ পরিদর্শক দপ্তরে আসেন। পরে তারা তাদের রেজিস্ট্রেশন না হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে শিক্ষার্থীরা ইনস্টিটিউটে গিয়ে তাদের টাকা ফেরত চান। কর্তৃপক্ষ টাকার বদলে ভর্তির সময়ে নেওয়া এইচএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও মার্কশিট ফেরত দেয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাহিদ পারভেজ বলেন, ‘ইনস্টিটিউটকে আমরা প্রত্যেকেই প্রায় ৪০ হাজার করে টাকা দিয়েছি। কিন্তু ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ আমাদের রেজিস্ট্রেশন করেনি। এখন আমরা কীভাবে পরীক্ষায় অংশ নেবো?’

জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নগরীর শাহমখদুম থানায় লিখিতভাবে জানিয়েছেন। থানার পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা হিসেবে নেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি মাসুদ পারভেজ।

এ বিষয়ে জানতে মেহেদী হাসানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে ইনস্টিটিউটের রিসিপশনিস্ট নিপা মুঠোফোনে বলেন, ‘মেহেদী হাসান দেশে নেই। কবে আসবেন সেটাও জানা নাই।’ তবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের টাকা ব্যবস্থাপক ফেরত দিতে চেয়েছেন বলে জানান তিনি।

রাবির কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক এম মজিবুর রহমান বলেন, ‘শীঘ্রই ওই ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

স/শা