টাইগারদের পারফরম্যান্সে হতাশ হয়ে যা বললেন পাপন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

মাত্র ২টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে শ’খানেকের বেশি টেস্ট খেলা দলের সঙ্গে খেলতে নেমেছে আফগানিস্তান।

আর টেস্টের সেই নবীন সদস্যদের কাছে কুপোকাত হতে চলেছে বাংলাদেশ।

বিষয়টি টাইগারভক্তদের মতোমেনে নিতে পারছেন না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নাজমুল হাসান পাপনও।

রশিদ খানদের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স তার মন ভেঙে দিয়েছে। সাংবাদিকদের সে কথাই জানালেন বিসিবি সভাপতি।

ব্যাটিংয়ে মোসাদ্দেক ও তাইজুলের অলরাউন্ডিং পারফম্যান্স ছাড়া চলমান টেস্টে মনে করার মতো তেমন কিছুই করে দেখাতে পারেননি টাইগাররা।

রশিদ খানদের ঘূর্ণিজালে পরাস্থ হয়েছেন একের পর এক ক্রিকেটার। অথচ সব দিক দিয়েই ফেভারিট ছিল সাকিবরা।

প্রথম দিন থেকেই চালকের আসনে আফগানরা। চতুর্থদিন তিন দফা বৃষ্টি বাগড়া না দিলে ম্যাচ পঞ্চমদিনে গড়াত কি না সন্দেহ।

টাইগারদের এমন ব্যর্থতার বিষয়ে ধানমন্ডির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হাসান পাপন হতাশার সুরে বলেন, ‘ভেবেছিলাম চট্টগ্রামে যাব। কিন্তু খেলা দেখে এতটাই হতাশ হয়েছি যে যাওয়ার ইচ্ছাই বাদ দিয়ে দিয়েছি।

টাইগারদের পরিকল্পনায় ভুল ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনাতো নিশ্চয়ই ছিল কিন্তু সেটা সঠিক ছিল না বলেই মনে করি। ওদের সঙ্গে বসতে হবে। বুঝতে হবে, কেন এমন হলো।

একটু ক্ষোভ প্রকাশ করে করে পাপন বলেন, ‘আফগানিস্তান যদি ৩০০ করে, আমাদের ৫০০ না করার কোনো কারণ নেই। এমন ফ্ল্যাট উইকেটে আমার ধারণা ছিল মুশফিক, সাকিব, রিয়াদ, মুমিনুলরা সেঞ্চুরি করবে। এই উইকেটেই তো সেঞ্চুরি করেছে আফগানিস্তানের ক্রিকেটার। ওরা পারলে আমারা পারব না কেন?

বাংলাদেশ কেন পারেনি সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘প্রথম ইনিংস যদি আপনি দেখেন, সেট হয়ে যাওয়ার পর লিটন দাস যে শটটা খেলল, মুমিনুল পঞ্চাশ করার পর একশ দেড়শো করবে, সে হলো টেস্ট স্পেশালিস্ট, সে যে শটটা খেলল। রিয়াদ যে শটটা খেলল, তাকে টেস্ট খেলা বলে? ওদের এখন কি বুঝাতে হবে, টেস্ট কিভাবে খেলতে হয়।

এ সময় আফগানদের ভূয়সী প্রশংসাও করেন নাজমুল হাসান।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের ব্যাটিং উইকেটে আফগান ব্যাটসম্যানরা সফল। অথচ একই কন্ডিশনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আত্মসমর্পণ করেছে। এখানে কৃতিত্ব আফগানিস্তানেরই। নবীন হয়েও ওরা টেস্ট কীভাবে খেলতে হয় তা দেখাল। ওরাই টেস্ট মেজাজে খেলেছে। ওদের সেঞ্চুরি হয়েছে। বাকিরা ৮০-এর বেশি রান করেছে। আর সেখানে আমাদের সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরা যদি ৫০ রানও না করতে পারে, তাহলে অন্তত টেস্টে জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই।

টাইগারর টেস্ট খেলছে বলে মনেই হয়নি বিসিবি সভাপতির কাছে।

এভাবেই চট্টগ্রাম টেস্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যর্থতার কথা বলতে গিয়ে দল নির্বাচন, উইকেট বাছাই, এমনকি ক্রিকেটারদের টেস্ট খেলার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বোর্ড সভাপতি।

তিনি পরে অবশ্য বলেছেন, যা চলে গেছে, তা নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। সামনে টি-টোয়েন্টি আছে, সেটা নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে।

আসন্ন ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দিয়েছেন নাজমুল হাসান।

প্রসঙ্গত আফগানদের ৩৪২ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০৫ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। ১৩৭ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬০ রান করে অলআউট হয় রশিদ খানের নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তান।

৩৯৮ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে রোববার চতুর্থ দিনে ১৩৬ রান সংগ্রহ করতেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে জিততে হলে বাংলাদেশের আরও প্রয়োজন ২৬২ রান, হাতে রয়েছে চার উইকেট। চতুর্থ দিন শেষে অপরাজিত রয়েছেন সাকিব ও সৌম্য।