জয়পুরহাটে পুলিশের মারপিটে ব্যবসায়ী নিহত: মামলা না নেওয়ার অভিযোগ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার হারুঞ্জা শাহপাড়া গ্রামে আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের মারপিটে ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার (৯ অক্টোবর) রাতে কালাই থানায় এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে নিহতের বাবা কাজেম উদ্দিন মামলা করতে যান। কিন্তু মামলা না নেওয়ায় তিনি ফিরে আসেন।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১০টার দিকে অভিযুক্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে কাজেম উদ্দিন থানায় মামলা করতে যান। থানায় তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন না। মোবাইলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে মামলা করার বিষয়টি জানালে তিনি অস্বীকৃতি জানান। রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত চেষ্টা করেও মামলার এজাহার গ্রহণে রাজি না হওয়ায় তারা ফিরে আসেন। মঙ্গলবার আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে জয়পুরহাট আদালতে মামলা দায়ের করা হবে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

নিহতের বাবা কাজেম আলী বলেন, ‘আমার নিরপরাধ ছেলেকে পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করলো। আর সেই হত্যার বিচারের জন্য থানায় মামলাও নিচ্ছে না পুলিশ।’

নিহতের বড় ভাই জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘ছোট ভাইকে হত্যার অভিযোগে কালাই থানার এস আই রফিকুল ইসলাম রফিক, আসাদ এবং দুই কনস্টেবল রাশেদুল ও ফারুককে আসামি করে সোমবার রাত ১০টার দিকে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মামলা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সোয়া এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এমনকি এজাহারও রিসিভ করেনি।’

কালাই উপজেলা চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন জানান, মামলা করার জন্য নিহতের পরিবারের সঙ্গে তিনিও কালাই থানায় উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু থানায় তখন ওসি ছিলেন না। মোবাইল ফোনে অনেক অনুরোধ করলেও তিনি থানায় আসেননি। এজাহার রিসিভ করার অনুরোধ করলে তাতেও রাজি হননি ওসি।

এ ব্যাপারে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান চৌধূরীর সঙ্গে মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকার কথা বলে লাইন কেটে দেন।

এদিকে, মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সাইদুরের স্ত্রী নাদিরা বেগম বিলাপ করছেন। প্রতিবেশী নারীরা তাকে সান্তনা দিচ্ছেন। মাঝে মধ্যে নাদিরা চিৎকার করে বলছেন, ‘আমার স্বামীকে যে পুলিশরা হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই, তাদের ফাঁসি চাই।’

প্রসঙ্গত, সোমবার (৯ অক্টোবর) ভোরে কালাইয়ের হারুঞ্জা শাহপাড়া গ্রামে মেহেদি হাসান শাপলা নামে এক আসামিকে ধরতে গিয়ে পুলিশ তার চাচা ব্যবসায়ী সাইদুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী হাসপাতাল ঘেরাও করে। পরে টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় চার জন গুলিবিদ্ধসহ ৯ জন আহত হয়।

স/অ