জয়পুরহাটের ইউপির চেয়ারম্যান আজাদ হত্যা: মূল পরিকল্পনাকারীর আত্মসমর্পন

নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাট:
জয়পুরহাটের আলোচিত ভাদসা ইউনিয় পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এ কে আজাদ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ভাদসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জয়পুরহাট জেলা পরিষদের সদস্য এবং ভাদসা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাতেম আলী (৫৮) আদালতে আত্মসমর্পন করেছেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এম, এ রব হাওলাদার এই আদেশ দিয়েছেন। আদালতের পুলিশ আসামী হাতেম আলীকে কারাগারে পাঠিয়েছে।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৩০ মার্চ ভাদসা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হন এ কে আজাদ। তিনি নির্বাচনে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচনের তিন মাস পর ওই বছরের ৪ জুন রাতে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা তাঁকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।

এ ঘটনায় ৫ জুন ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই এনামুল হক বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা পাঁচ-সাত জনকে আসামী একটি মামলা দায়ের করেনন। ১২ জুন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীনবস্থায় চেয়ারম্যান একে আজাদ মারা যান। পরে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে ন্যস্ত হয়। বদলিজনিত কারণে চার বার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরির্বতন হয়। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর সিআইডির পরির্দশক জিয়াউর রহমান মামলার তদন্তভার নেন। তিনি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হাতেম আলীকে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁকেসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এই মামলার দুই আসামি মনিরুজ্জামান ও সোহেল রানা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাঁদের মামলা থেকে অঅব্যাহতি দেওয়া হয়। সোমবার হাতেম আলী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করেন। আদালতের বিচারক এম, রব হাওলাদার আসামী হাতেম আলীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

জয়পুরহাট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, ভাদসা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এ,কে আজাদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামী হাতেম আলী আদালতে আত্মসমর্পন করার পর বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

নিহতের ছোটভাই ভাদসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন স্বাধীন বলেন, আমার বড় ভাই এ কে আজাদ ভাদসা ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার তিন মাস পর আমার ভাইকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ভাদসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জয়পুরহাট জেলা পরিষদের সদস্য হাতেম আলী। আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হওয়ার পর তিনি লোকজনদের কাছে বলেছিলেন, তাঁকে নাকি একদিনের জন্য কারাগারে থাকতে হবে না। এই মূল পরিকল্পনাকারী কারাগারে যাওয়ায় আমরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি। মামলার রায়ে আসামী দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হলে আমার ভাইয়ের আত্মা ও আমরা শান্তি পাব।

স/া