জোর করে নৌকায় উঠিয়ে গন্তব্যে যেতে পারবেন না: নুর

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মেজর জেনারেল (অব.) শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম) আজীবন বিএনপি করেছেন।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে শ্রমিক হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ, কর্মচ্যুতদের পুনর্বহাল, গ্রেপ্তারদের মুক্তি, গার্মেন্টস শিল্প ঘোষিত মজুরি প্রস্তাব প্রত্যাহার এবং ন্যূনতম মুজুরি ২৫ হাজার টাকা পুনঃনির্ধারণের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ (এসএসপি)।

সমাবেশে নুরুল হক নুর আরও বলেন, দুঃখজনক হচ্ছে, আজকের যে নির্বাচনের নামে নাটক হচ্ছে এ নাটক আওয়ামী লীগ করছে না। সরকার করছে না, বিদেশিরাও করছে না, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের টাকা পয়সা অর্থ বিত্ত ক্ষমতাকে ভোগ করার জন্য তারা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সাইনবোর্ডকে ব্যবহার করে এ সাজানো-পাতানো নির্বাচনের দিকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ৩৮টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আর বহির্বিশ্ব বলছে, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক না হয় তাহলে এর ভুক্তভোগী হব আমরা জনগণ।

তিনি বলেন, যে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন করেছে, তাকে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তেমনি একইভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জহির উদ্দিন স্বপন থেকে শুরু করে বিএনপির সিনিয়র নেতারা গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা ২৮ অক্টোবর পুলিশের অনুমতি পেয়েছে, সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে, একটা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পল্টনে করতে চেয়েছিল। সেখানে প্রশাসনের ব্লু প্রিন্টে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীরের গুণ্ডা-পাণ্ডা দিয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার নাটক করিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে। এমনকি আমাদেরও ভয় দেখানো হয়েছিল। আমরা যদি নির্বাচনে না যাই ওই প্রধান বিচারপতির মামলায় আমাদেরও জেলে ঢুকানো হবে।

মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার পতন ঘটাতেই হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আজকে ৫২ বছরের রাজনীতিতে সুবিধাবাদী লোকেরা দালাল চরিত্রহীন তৈরি হয়েছে, যে চরিত্রহীনরা মানুষের আবেগ অনুভূতি নিয়ে খেলেছে। স্বৈরাচারের দোসর হয়েছে। যার ফল আজকে আমরা ভোগ করছি। আজকে সারাদেশের কৃষক শ্রমিকদের রাজনৈতিক অধিকার কায়েম করার জন্য সবাইকে জেগে উঠতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে আমাদের দাস-দাসি মতো বানানো হচ্ছে। যখন মন চাইবে আমাদের জেলে ঢুকাবে, যখন মন চাইবে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নাশকতার মামলা দিয়ে থানায় ঢুকাবে। এভাবে একটা রাষ্ট্র চলতে পারে না। আমরা অস্তিত্বের সংকটে দাঁড়িয়ে আছি। নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচানোর জন্য জনগণকে রাজপথে ঝাঁপিয়ে করতে হবে। শেখ হাসিনার পতন ব্যতীত আমাদের মুক্তি নেই। আমাদের মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার পতন ঘটাতেই হবে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি আরও বলেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগের গুণ্ডারা অস্ত্র নিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা করেছে। সমস্ত জায়গায় তাদের এজেন্টদের দিয়ে একটা উত্তেজিত পরিস্থিতি তৈরি করে আন্দোলনকারীদের ওপর দায় চাপানো হয়। আজকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির প্রতি আমরা সংহতি প্রকাশ করছি। সমর্থন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে অন্যান্য সেক্টরের শ্রমিকরা যেন বাচ্চাদের পড়াশোনা করাতে পারে, তারা যেন অসুস্থ বলে সুচিকিৎসা পায়, এ সমাজে যেন তারা মান এবং মর্যাদা নিয়ে বাস করতে পারে তাই চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সব শ্রেণি পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত হয়ে ফ্যাসীবাদের পতন ঘটিয়ে আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। সব রাজবন্দি শ্রমিক নেতাদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।

বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক এ এ এম ফয়েজ হোসেন, নির্বাহী সমন্বয়ক আব্দুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবলু ও জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।