জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা: সক্ষমতা অর্জনের পর দায়িত্ব নেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক। আর এটি পরিচালনার দায়িত্ব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু এই মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে এখনও কোনও অভিজ্ঞতা না থাকায় এ বছর পরীক্ষা নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জানানো হয়েছে এ দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।

 

সূত্র জানায়, চলতি বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে। তবে এ দায়িত্ব নেয়নি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু, পরীক্ষা শুরুর মাত্র ১২ দিন আগে এই দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানায় এ মন্ত্রণালয়। ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ২৩ অক্টোবর সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, সঠিক সময়েই পরীক্ষা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

 

বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে পরীক্ষা শুরুর পর শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, সক্ষমতা অর্জন করলে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার দায়িত্ব নেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

 

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘বেসিক এডুকেশন (প্রাথমিক শিক্ষা) অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা বলেছে পারবে না। তারা পরীক্ষা নিলে, আমরা সব রকম সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। তবে এ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। একই সরকারের দুটি মন্ত্রণালয়, একই শিক্ষা পরিবার। এবারের পরীক্ষা শেষ হয়ে যাক।’

 

কবে থেকে এ দায়িত্ব নেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যখন যোগ্যতা অর্জন করবে তখনই তারা দায়িত্ব নেবে পরীক্ষার। সব রকম সহযোগিতা আমরা করবো। যতদিন তারা তা না পারে, ততদিন পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় রয়েছে এ পরীক্ষার জন্য।

 

প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ ছিল, তারা শিক্ষক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অ্যাওয়ার্ড দিতে পারেন না, আর  জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার দায়িত্বও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।

 

বিষয়টি সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘বিষয়টি সরকারের। এর চেয়ে এখানে আমার বেশি কিছু বলা উচিত হবে না।’

 

তবে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এ সাফল্য অর্জন করে এসেছে। এখানে কোনও ব্যত্যয় ঘটেনি। পরীক্ষা কে নিলো কীভাবে নিলো এটা একটা সিদ্ধান্তের প্রশ্ন। কোনও বিষয়ে কোনও ভিন্নমত থাকতে পারে, সেটা অন্য বিষয়। পরীক্ষা তো নেওয়া হচ্ছে’ যোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী।

 

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কবে নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষা হিসেবে বিবেচিত হবে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষানীতির মধ্যেই আছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক এবং প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় নিতে হবে। শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের শুরুর দিন থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল যে আমরা ২০১৮ সালের মধ্যেই আমরা সম্পন্ন করবো। এটি বাস্তবায়নে এক বছর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে প্রস্তুতি নেওয়া হয় পরীক্ষার। এর বেশি পরিষ্কার করতে চাননি শিক্ষামন্ত্রী।

 

সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করার আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। অভিভাবকদের খোঁজ-খবর নেন, কার কয়টি বাচ্চা তাও জানতে চান। একজন অভিভাবক শিক্ষামন্ত্রীকে বলেন, ‘তার একটি বাচ্চা।’ এ সময় শিক্ষামন্ত্রী অভিভাবকের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার একটা বাচ্চা। আমারতো ২৫ লাখ বাচ্চা। কোনও চিন্তা করবেন না। বাচ্চাদের বাড়তি চাপ না দেওয়ার অনুরাধ জানান শিক্ষামন্ত্রী।

 

শিক্ষামন্ত্রী অনুরোধ জানান, ভুয়া প্রশ্নপত্রের পেছনে কেউ যেন না দৌড়ান। পরে পরীক্ষার হল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন