জীবন যুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজজীবনপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র রাজিব

কামাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে জীবন যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া রাজিব আলী। সে রামজীবনপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র। বাবা ধান কাটতে গেছে, মা বাড়িতে আছে। সাথে দুটো গরু আছে, গরুর খাবার কেনার টাকা জোগাড় করতে বাবা না আসা পর্যন্ত রিকশা চালাতে হবে এমনিভাবে মনের কথা জানালো রাজিব আলী।

মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাথে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা শেষে সদর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে ফেরার সময় উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকে একটি রিকশায় উঠলাম। রিকশাওয়ালা একজন সুন্দর চেহারা ও গড়নের কিশোর। আসছিলাম আর বার বার ওর দিকে তাকাচ্ছিলাম। ভাড়া পরিশোধ করার পর কিশোরকে কৌতুহলবশত: প্রশ্ন করলাম এবং তার অনুমতি নিয়ে একটি সেলফি তুললাম। নাম কি? তুমি লেখাপড়া কর কিনা? তোমার বাবা মা আছে কিনা? কেন এত অল্প বয়সে তুমি রিকশা চালাচ্ছ?

কিশোর রিকশাওয়ালা: আমার নাম রাজিব, বাড়ি নসিপুর, রামজীবনপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি। বাবা ধান কাটতে গেছে, বাড়িতে মা আছে। বাড়িতে দুটো গরু আছে, গরুর খাবার কেনার টাকা জোগাড় করার জন্য বাবা না আসা পর্যন্ত রিকশা চালাতে হবে।

জিজ্ঞাসা করলাম: তোমার তো কয়েকদিন পর বার্ষিক পরীক্ষা? সে এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কিছুক্ষণ চুপ থাকলো।

আমিও অফিসে চলে আসলাম। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, রাজিবের রিকশা না চালালেও চলবে লেখাপড়া, তার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও ষষ্ঠ শ্রেণী হতে সপ্তম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার ফলাফল আপাতত এটাই প্রমাণ করে। প্রধান শিক্ষক, রামজীবনপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়কে একটি সুন্দর ও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। আসুন আমরা সকলে মিলে রাজিবদেরকে স্কুলে পাঠাই।

‘সরি রাজিব তোমার অনুমতি ছাড়াই তোমাকে নিয়ে লিখলাম’ এমনটায় লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের লাইমলাইনে পোস্ট করেছেন সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কায়ছার মোহাম্মদ।

স/অ