জীবন এক বিস্ময়!

সবাই জয়ী হতে চায়। কেউ পরাজিত হতে চায় না। খেলার মাঠে কোনো পক্ষই হারতে চায় না। দৌড় প্রতিযোগিতায় সবাই প্রথম হতে চায়। কিন্তু সবাই জয়ী হয় না। কোনো একজন বা কোনো এক পক্ষ জয়ী হয়। নির্বাচনেও একটি দল ক্ষমতায় আসে। একজন এমপি, চেয়ারম্যান বা মেম্বার হন একটি এলাকা থেকে। জীবনের সব ক্ষেত্রেই তাই। অনেকেই লোটো খেলেন কিন্ত জেতেন খুব অল্প মানুষ।

ক্যাসিনোতে গিয়ে অনেকে ফতুর হন আবার অনেকে পকেট ভরে নিয়ে আসেন। জুয়ার টেবিলেও তাই। অনেকেই লেখেন কিন্তু সবাই পুরষ্কার পান না। মাঝে মাঝে রিয়েলিটি শো দেখি। সারেগামাপা লিটল চ্যাম্প বা ইন্ডিয়ান আইডল। কি চমৎকার সব প্রতিযোগিতা। মনে হয় সবাইকেই পুরষ্কার দিয়ে দেই। কিন্তু তাত হবার না। শেষ পর্যন্ত একজনই প্রথম হন। এটাই প্রতিযোগিতার নিয়ম। কে যে এই নিয়ম বানিয়েছে কে জানে! সবাই প্রথম হতে চায় কিন্তু সবাই প্রথম হয় না। লক্ষ প্রতিযোগির মধ্যে একজন হয়। তাই বলে প্রতিযোগিতা থেমে থাকে না। এটাই নিয়ম। প্রতিযোগিতাময় এই পৃথিবী।

জীবনে সব সময়, সব ক্ষেত্রে জয়ী হতে চাওয়া ঠিক না। কখনো কখনো পরাজিত হতে হয়। পরাজয় মানতে হয়, মেনে নিতে হয় হৃষ্টচিত্তে। ইচ্ছে করে হলেও পরাজিত হওয়া উচিত। পরাজয়ের মধ্যেও যে লুকিয়ে থাকে জয়ী হওয়ার আকাঙ্খা সেই বোধকে জাগ্রত করতে হবে। সবসময় এগিয়ে থাকার মানসিকতা সঠিক নয়। সবসময় প্রতিযোগিতা ভাল না। তাতে ঈর্ষা বাড়ে, হিংসার মানসিকতা তৈরী হয়। পরাজয়ের বেদনা আছে বলেই জয়ী হওয়ার আনন্দ বোঝা যায়। কষ্ট না থাকলে সুখের অনুভূতি বোঝা যেতো না। চাইলেই সবাই সুখী হতে পারে না। দুঃখও তেমনি। নিজের অজান্তে এসে হানা মারে। রাত আছে বলেই দিনের আলো ভালো লাগে। সূর্যের আলো আছে বলেই চাঁদের স্নিগ্ধ আলো বিমোহিত করে। বিচ্ছেদ আছে বলেই মিলনের আকাঙ্খা আছে। কান্না আছে বলেই হাসি আছে। হাসার স্বাধীনতা যেমন থাকা উচিত তেমনি কান্নার স্বাধীনতাও থাকা উচিত। প্রাপ্তির আনন্দ আছে বলেই হারানোর বেদনা আছে। অসুস্থ্যতা আছে বলেই সুস্থ্যতাকে আর্শীবাদ মনে হয়।

 

জীবন একটি রেস। নিরবচ্ছিন্ন সুখও নাই দুঃখও নাই। জয়ী হওয়াও নাই পরাজয়ও নাই। জীবন অতি রহস্যময়। এর প্রতি পরতে পরতে লুকিয়ে বিস্ময়!

 

সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন