জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রাজশাহীর এই চিকিৎসকরা লড়ছেন করোনাযুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ডা: অধ্যাপক বুলবুল হাসান বিভাগীয় প্রধান মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ ও ডা: অধ্যাপক সাবেরা গুলনাহার বিভাগীয় প্রধান ভাইরোলজি বিভাগের নেতৃত্বে ৫ জন ডাক্তারের সমন্বয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে এগিয়ে চলেছে করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণের কাজ। তবে টিমের প্রধান হলেন সাবেরা গুলনাহার।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই টিম রাজশাহী বিভাগের করোনা সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে চলেছেন। এছাড়া একই রোগীদের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন আরো ১৫ চিকিৎসক। যাদের নেতৃত্বে রয়েছেন ডাক্তার আজিজুল হক আজাদ।

এদিকে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা স্বাভাবিক আছে বলে দাবি করেছেন হাসপাতালটির উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস। বুধবার তিনি জানান, হাসপাতালে সেবা নিতে আসা কাউকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে না। মঙ্গলবার হাসপাতাটির আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন ৫১০জন। এছাড়া এদিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিল ৬৫৬ জন। মঙ্গলবার মোট ৪৬টি অপারেশন (ওটি) হয়েছে। হাসপাতালের সকল চিকিৎসক ও নার্সদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

রামেকের করোনা চিকিৎসা টিমের আহ্বায়ক ডা. আজিজুল হক আজাদ জানান, রামেক হাসপাতালে করোনা সন্দেহে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পাশাপাশি হাসপাতালের অন্যান্য যেস চিকিৎসা সেবা তা অব্যাহত আছে। মঙ্গলবার তিন জন নতুন রোগীকে আইডি আসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে একজন পাবনা থেকে আসা। অপর দুই জন রাজশাহীর কাটাখালি ও নওদাপাড়ার রোগী। বুধবার তাদের নমুনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় পর্যন্ত আইডি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আর কোন রোগী ভর্তি নেই। রাজশাহীতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ করে ডা. আজাদ আরো জানান, রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কেউ এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ রোগী পাওয়া যায়নি। যদি কোন কারণে এমন পরিস্থিতি আসে তবে রামেক হাসপাতালের সকল চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

রামেকের করোনা পরীক্ষগারের প্রধান সাবেরা গুলনেহারের দেয়া তথ্য মতে, বুধবার ল্যাবটিতে মোট ৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ীর ২, মোহনপুরের ৩, দুর্গাপুরের ২, পবার ১, পুঠিয়ার ১, বাঘার ১ (মৃত) জনের ও আইডি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাক ৩ জনের নমুনা রয়েছে। এছাড়া নওগাঁর ২৬, বগুড়ার ১৩, জয়পুরহাটের ৯, সিরাজগঞ্জের ৩ ও নাটোরের ৯ জনের নমুনা রয়েছে। এদিকে ১ এপ্রিল ল্যাবটি চালুর পর মোট ১৭১টি নমুনা পরীক্ষ করা হয়েছে।

এদিকে রাজশাহী বিভাগে কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের সংখ্যা কমে এসেছে। মঙ্গলবার রাজশাহী স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার মধ্যে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে কাউকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়নি। তবে পাবনায় ৩২ জনকে, নওগাঁয় ১৬, সিরাজগঞ্জে ১৩, জয়পুরহাটে ১৩, নাটোরে ৩ ও বগুড়ায় ১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ৮মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পর থেকে রাজশাহী বিভাগে এপর্যন্ত ৭ হাজার ৩৫২ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। আর এপর্যন্ত ৬ হাজার ৬০২জনকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।

স/আর