জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

পূর্ণিমার জোয়ারে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। ট্রলার ভর্তি করে ফিরে আসছেন জেলেরা। কাক্সিক্ষত ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে ও আড়তদারদের মুখে। বাজারে তুলনামূলক কম দামে পাওয়ায় খুশি ক্রেতারাও।

মাছ ধরতে সাগরে যাওয়া শত শত নৌযান আগামী সপ্তাহের মধ্যে ফিরে আসবে। তখন দাম আরও কমবে বলে জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা।

গতকাল মঙ্গলবার ভোরে সরেজমিন কর্ণফুলী নদীতীরবর্তী নগরীর বৃহৎ পাইকারি মাছবাজার ফিশারিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, রুপালি ইলিশে ভরপুর বাজার। ব্যস্ত পাইকাররা। অলিগলি ও পাড়া-মহল্লায় দিনভর হাঁক ছাড়ছেন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা। খুচরা বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ ৫৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। আর পাইকারি বাজারে ৬০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৩৭৫-৪০০ ও ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। সোম ও মঙ্গলবার দুদিনে পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের পুরাতন এবং নতুন ফিশারিঘাটে প্রায় ১৮ হাজার মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে।

ফিশারিঘাটের পাইকারি ব্যবসায়ী শাহ আলম দেশ রূপান্তরকে জানান, ইলিশের সরবরাহ ভালো। নদীর পাশাপাশি প্রচুর সাগরের ইলিশও বাজারে আসছে। এজন্য দামও কম। ফিশারিঘাট পুরাতন বাজার-চট্টগ্রাম মহানগর মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম জানান, জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। দাম কম হওয়ায় ক্রেতারাও বেশি কিনছেন। সামনে দাম আরও কমবে। পুরাতন ফিশারিঘাট মাছবাজারে সোম ও মঙ্গলবার দুদিনে প্রায় ৮ হাজার ৬০০ মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি। বক্সিরহাটের খুচরা বিক্রেতা আব্দুর রহিম জানান,  তিনি ৩৫ কেজি ইলিশ আনেন। অল্প সময়ের মধ্যে বেশিরভাগ মাছ বিক্রি হয়ে যায়।

গত সোমবার রাত ৯টায় মেরিনার্স রোডসংলগ্ন ফিশারিঘাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সমুদ্র থেকে ইলিশ নিয়ে ফিরেছে ১৬টি ট্রলার। সেখানে এফভি শাহেন শাহ ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, প্রজনন সময়ে দীর্ঘদিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইলিশের ভালো বৃদ্ধি হয়েছে। প্রচুর ইলিশ জালে ধরা পড়ছে। প্রায় ৮৮ মণ মাছ আড়তে তুলেছেন বলে জানান তিনি। জেলে মো. রতন বলেন, ‘জোয়ার বাড়ার কারণে সাগরের মাছ উজানে আসছে। এজন্য দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ প্রচুর ধরা পড়ছে। ’

সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বাবুল বলেন, ‘পূর্ণিমার জোয়ারের আগে-পরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় বাজারেও প্রভাব পড়েছে। এক সপ্তাহ আগেও যেখানে ৬০০-৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি মণ ইলিশ ১৭-১৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, এখন তা ১৪ হাজারে নেমে এসেছে। প্রতিদিন ঘাটে ৬০-৮০টি ট্রলার ফিরছে, এতে প্রায় ৮০-১১০ মণ ইলিশ থাকছে। ’ উত্তর চট্টলা উপকূলীয় মৎস্যজীবী জলদাস সমবায় কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি উপেন্দ্র জলদাস জানান, গত সোমবার পূর্ণিমায় ইলিশের ঝাঁক ধরা পড়েছে। তাদের মতো ছোট বোটের জেলেরা ২০-২৫ কেজি করে মাছ পেয়েছেন বলে জানান তিনি। সূত্র: দেশ রুপান্তর