সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
জামায়াতে ইসলামী ও দলটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত চরমপন্থী দলগুলোকে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে মার্কিন কংগ্রেস। একইসঙ্গে দলটি ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে একটি প্রস্তাব পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস। এতে দলটির অব্যাহত হুমকি মোকাবিলায় তার সক্ষমতা উপড়ে ফেলতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইন্ডিয়ানার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জিম ব্যাংকস কংগ্রেসে এ প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। এতে বিএনপি-সহ বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য চরমপন্থী সংগঠনের সংস্পর্শ থেকে দ্ব্যর্থহীনভাবে দূরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিনিধি পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
প্রস্তাবে দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে পাকিস্তান ও বাংলাদেশে ধর্মীয় দলগুলোকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, আল কায়েদা ও তালেবানের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের যোগাযোগ রয়েছে। এই দলটি এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত চরমপন্থী দলগুলো দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। ফলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সহিংসতার গুরুতর ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের এক প্রস্তাবেও দ্ব্যর্থহীনভাবে জামায়াতে ইসলামীর কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে বিএনপি-কে আহ্বান জানানো হয়েছে।
কংগ্রেসম্যান ব্যাংকস বলেন, বাংলাদেশের আইনজীবী ও বিরোধী রাজনীতিক কামাল হোসেন প্রকাশ্যেই বিএনপি-কে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রিপাবলিকান দলীয় এই কংগ্রেসম্যানের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রেও জামায়াতে ইসলামীর ভাবধারা পোষণ করে; এমন অনেক সংগঠন রয়েছে যারা তহবিল সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত। এক্ষেত্রে তিনি উদাহরণ হিসেবে ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকা, শেয়ার লিডারশিপের নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এসব সংগঠন খোলাখুলিভাবেই জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
তিনি বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর বারবার হামলা, ধর্মীয় চরমপন্থার বিস্তার এবং জামায়াত-ই-ইসলামী সহ সংশ্লিষ্ট মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতা, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থের জন্য হতাশাব্যাঞ্জক।
প্রস্তাবে বলা হয়, ধর্মীয় চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বাড়বাড়ন্ত রোধে মানবাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র রক্ষার মতো বিষয়গুলোতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী ও দলটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত চরমপন্থী দলগুলোর অব্যাহত হুমকি মোকাবিলায় তাদের সক্ষমতা যেন উপড়ে ফেলা হয়। এছাড়া বিএনপি-সহ বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে ও এর বাইরে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সব প্রতিষ্ঠানে ইউএসএআইডি, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর, হোমল্যান্ড সিকিউরিটিজসহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য সংস্থার তহবিল সরবরাহ বন্ধ করারও দাবি জানানো হয়েছে প্রস্তাবে। এসব সংস্থার মধ্যে রয়েছে ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকা, আইসিএনএ রিলিফ, হেল্পিং হ্যান্ড ফর রিলিফ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, দ্য মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা।