জাদুকর লেখকের বিদায়ের দিন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

১৯ জুলাই। এই দিনটি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের হোক তা কেইবা চেয়েছিল। ২০১২ এইদিনেই চিরবিদায় নেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) হিমু ও মিসির আলীর স্রষ্টা হুমায়ূন আহমেদের ষষ্ঠ প্রয়াণ দিবস।

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম সেরা লেখক। ১৯৪৮ সালে জন্মেছিলেন তিনি। আধুনিক কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের এই পথিকৃৎ নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক আর গীতিকার হিসেবেও সফল হয়েছেন।

তিন শতাধিক বইয়ের রচয়িতা হুমায়ূন আহমেদ পেশাজীবনে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক। পরে লেখালেখি ও চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।

‘নন্দিত নরকে’ উপন্যাসের মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য জীবন শুরু হয়। এরপর একে একে লেখেন অনেক উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ। সহজ ভাষায় সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জীবনযাপন তুলে ধরতে পারার চমৎকার জাদুকাঠি ছিলো তার হাতে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে উপন্যাস ‘মধ্যাহ্ন’ ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ অবলম্বনে ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ কীর্তির অংশবিশেষ। এছাড়া তার সেরা গ্রন্থাবলীর মধ্যে রয়েছে ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘অনন্ত নক্ষত্র বীথি’, ‘ময়ূরাক্ষী’, ‘একজন মিসির আলী’, ‘বৃষ্টি বিলাস’, ‘জনম জনম’, ‘নীল মানুষ’ ইত্যাদি।

হুমায়ূন আহমেদের বানানো সেরা চলচ্চিত্রের মধ্যে দর্শকপ্রিয় ‘আগুনের পরশমনি’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘আমার আছে জল’, ‘চন্দ্রকথা’ ইত্যাদি। ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ তার নির্মিত শেষ চলচ্চিত্র।

অসামান্য প্রতিভাবান লেখক হুমায়ূন আহমেদের সাফল্যের ঝুলি সমৃদ্ধ হয়েছে বিভিন্ন পুরস্কারে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে একুশে পদক, জাতীয় পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার, হুমায়ূন কবীর স্মৃতি পুরস্কার।

২০১১ সালে সিঙ্গাপুরে হুমায়ূন আহমেদের দেহে ক্যান্সার ধরা পড়ে। অল্প সময়ের মধ্যেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। কৃত্রিম লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউইয়র্কের বেলেভ্যু হাসপাতালে মারা যান সবার প্রিয় গল্পকথক হুমায়ূন আহমেদ।