জাতির পিতার জন্মদিন আজ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর জন্ম। ছোটবেলায় তিনি খোকা নামে পরিচিত ছিলেন। এই খোকাই পরবর্তী সময়ে হয়ে ওঠেন বাঙালির হাজার বছরের পরাধীনতা থেকে মুক্তির দূত।

তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই দেশ স্বাধীনতা লাভ করে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়। আজ সরকারি ছুটি। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আজ টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আলোচনাসভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং বিশেষ প্রার্থনাসভার আয়োজন করা হচ্ছে।

জাতির মুক্তির সংগ্রাম করতে গিয়ে যৌবনের ১৪টি বছর কারাগারে কাটিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-র ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। তাঁর দৃঢ়চেতা নেতৃত্বে পুরো জাতি স্বাধীনতার জন্য তৈরি হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়।

স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে মনোযোগী হন বঙ্গবন্ধু, কিন্তু তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিপথগামী সেনা সদস্যদের গুলিতে সপরিবারে নিহত হন। তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীত ধারায় পরিচালিত হতে শুরু করে।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারা দেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন; সকাল সাড়ে ৭টায় ধানমণ্ডিতে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ; সকাল সাড়ে ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল; দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা; বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া, মিলাদ মাহফিলসহ নানা কর্মসূচি থাকছে।

এ ছাড়া সকাল ৮টায় তেজগাঁও গির্জা ও সকাল ৯টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে খ্রিস্টান সম্প্রদায়, সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সকাল ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনাসভার আয়োজন করেছে।

আগামীকাল শুক্রবার টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগের এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হচ্ছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে সারা দেশে যথাযথ মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।

‘টুঙ্গিপাড়া : হৃদয়ে পিতৃভূমি’

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আজ গোপালঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়    ‘টুঙ্গিপাড়া : হৃদয়ে পিতৃভূমি’ শীর্ষক দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানমালার আয়োজন হবে।

আমাদের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স এলাকা পরিষ্কার এবং আশপাশের এলাকা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। টুঙ্গিপাড়াসহ জেলার সর্বত্র তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়া শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে আগামী ২১ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী লোকজ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে ১০০টি স্টল করা হয়েছে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ