জমেছে জুতা-সেন্ডেলের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঈদকে ঘিরে সবার নানান পরিকল্পনা। ঈদে নতুন পোশাক তো থাকতেই হবে তার সঙ্গে মানানসই নতুন জুতা না হলে কোথায় যেন অপূর্ণতা থেকে যায়। তাই পোশাক কেনা শেষে সবাই ছুটে চলেন জুতার দোকানগুলোতে। আর সেই জন্য রাজশাহীর জুতার বাজার সত্যিকার অর্থেই জমজমাট হয়ে ওঠে ঈদের মৌসুমে।

এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। জুতার কেনা বেচা চলবে একদম চাঁদরাত পর্যন্ত। সবাই নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রেতারা বেছে নিচ্ছেন জুতার দোকান। তবে ঈদে নতুন জুতা কেনার ব্যাপরে বড়দের চেয়ে ছোটদের আগ্রহটা যেন একটু বেশিই।

ব্র্যান্ডের জুতার কথা বলতে গেলে প্রথমেই যে নামগুলো চলে আসে সেগুলো হলো বাটা, বে, অ্যাপেক্স, লোটো, জিল্স ইত্যাদি। এসব ব্র্যান্ডের শোরুমগুলো সারা বছরই নানা ডিজাইনের জুতায় পরিপূর্ণ থাকে। ঈদের সময় সেইসব ডিজাইনের সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন নতুন কালেকশন। জুতাভেদে তারা বিভিন্নরকম ছাড়ও দিচ্ছেন। যা ক্রেতাদের মধ্যে কেনার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দেয়।

বাটার একাধিক শোরুম ঘুরে দেখা গেছে নতুন আসা জুতাগুলোর প্রতিই ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ। মেয়েদের স্লিপার, পেন্সিল হিল, হাই হিল, পম্পি ইত্যাদি নানান রং ও চোখ ধাধানো ডিজাইনে পরিপূর্ণ শোরুম। ঈদে ছেলেরা সাধারণত পাজামা-পাঞ্জাবির সঙ্গে স্যান্ডেল পরেন। তাই ছেলেদের স্যান্ডেল কিনতে বেশি দেখা যাচ্ছে। বাবা-মার হাত ধরে ছোট শিশুদেরও স্যান্ডেল কিনতে দেখা যাচ্ছে।

বাটার রানীবাজার শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হোসাইন আরী নিপু বললেন, বাটার চাহিদা সব সময়তেই বেশি। ক্রেতারা আমাদের প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আর ঈদ উপলক্ষে ক্রেতাদের ভিড় তো অনেক বেশি।

এরপর অ্যাপেক্সের শোরুগুলোতে গিয়ে দেখা গেল জমকালো জুতোয় ঝলমল করছে চারদিক। স্টোন বসানো মেয়েদের চমৎকার কিছু পেন্সিল হিল, লেদারের পম্পি, বোস্টন, ভেলভেট ও লেদারের স্লিপার। ছেলেদের ক্যাজুয়াল সু, ফরমাল সু এবং স্যান্ডেল বিভিন্ন ভাবে সুসজ্জিত অবস্থায়। বেবিদের ও কালেকশনের কমতি নেই, পম্পি, স্যান্ডেল, কেড্স।

রানীবাজার অ্যাপেক্সের শোরুমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জুতা কিনছিলেন। তিনি বললেন, আমি অ্যাপেক্সের জুতা ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি। অ্যাপেক্সের জুতাগুলো অনেক টেকসইও হয় এবং বৃষ্টি-কাদা, যেকোনো আবহাওয়ায় জুতা সহজে নষ্ট হয় না। শুধু ঈদেই নয়, আমি এবং আমার পুরো পরিবার সাধারণত অ্যাপেক্স থেকেই সবসময় জুতা কিনি।

এসব শোরুগুলোতে মেয়েদের সু আইটেমগুলো মোটামোটি ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এরমধ্যে টপ মার্টে মেয়েদের সু আইটেম গুলো মধ্যে নতুন ধরনের হিল চোখে পড়ে গেল। সেখানে একজন বিক্রয়কর্মী কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তার নাম বললেন কারচুপি হিল।

এদিকে নিউ মার্কেটে লুক মি, সিটি সুজ, স্মার্ট কালেকশন, নিউ ফাস্ট টেক, ইউনিক প্লাস, ক্লাসিক সুজ ইত্যাদি জুতার দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেল এখানেও ক্রেতাদের ভিড়ের কমতি নেই। এখানে জুতাভেদে বিভিন্নরকম নাম ও দাম। বিদেশি ব্রান্ড, নন ব্রান্ডের জুতার পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। তবে চায়না প্রোডাক্টই বেশি। মেয়েদের বাহারি রঙের ড্রেসের সঙ্গে পাথর ও পুঁথিযুক্ত স্যান্ডেল, হিল, হাই হিল, স্লিপার স্যান্ডেল কিনতে দেখা যাচ্ছে। শিশুদের সু আইটেমে রয়েছে বাহারি রঙের কেড্স, স্যান্ডেল, পাম্প সু ও লোফার।

অপরদিকে ভুবনমোহন পার্কের পাশে অনেকগুলো জুতার দোকান রয়েছে। সেখানে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে রীতিমত। বিক্রেতাদের কোনোদিকে তাকানোর সুযোগ নেই। আঁখি সুজ, লাকি সুজ, প্রিন্স অ্যান্ড প্রাইম, কাজী সু হাউজ, সিয়াম সুজ, মীম সুজ ইত্যাদি। এসব জুতার দোকানগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো খুব কম মূল্যে ছেলেদের, মেয়েদের ও শিশুদের নানান ডিজাইনের জুতার বিপুল সমাহার।

এসব জুতার ব্যবসায়ীরা জুতা আমদানি করেন ঢাকার গুলিস্তান থেকে। রাজশাহীতেও কারো কারো নিজস্ব জুতা তৈরির কারিগর রয়েছে। এখানে ৫০০ থেকে এক হাজারের মধ্যে মেয়েদের জুতা কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।

 

স/আ