জমি জটিলতায় পিছিয়ে গেল রামেবি’র কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) নিয়ে অনেক আশা ছিল এ অঞ্চলের মানুষের। এ বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমি অধিগ্রহণেই আটকে গেল রামেবির কার্যক্রম। গত ১৬ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব রামেবির জন্য নির্ধারিত জমি দেখতে এসে ক্ষুব্ধ হন। এরপর তিনি অন্য জায়গায় জমি অধিগ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন।

যে জমিটি উপাচার্য ডা. মাসুম হাবিব পছন্দ করেছিলেন, সেটি সরকারে কাছ থেকে বরাদ্দ নিয়ে বসবাস করছেন শতাধিক পরিবার। এ কারণে জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে আইনি সমস্যায় পড়ে জেলাপ্রশাসন। সেজন্য জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম শুরু করেনি জেলাপ্রশাসন।

মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পিছিয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন চিকিৎসক নেতা ও সিন্ডিকেটের সদস্যরা। রাজশাহী স্বাচিপ’র সভাপতি ডা. চিন্ময় কান্তি জানান, শুধুমাত্র উপাচার্যের অদক্ষতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম পিছিয়ে গেল। এখন নতুনভাবে জমি খুঁজে, অধিগ্রহণ, ভবন নির্মাণ করে কার্যক্রম শুরু করতে অনেকটা সময় বেশি ব্যয় হবে।

রামেবি সিন্ডিকেটের সদস্য ডা. নওশাদ আলী জানান, যে জমিটি দেখা হয়েছিল, সেটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নাকচ করে দিয়েছে। এখন নতুন করে আবার জমি দেখতে হবে। এতে আবারও অনেকটা সময় পিছিয়ে গেল কার্যক্রম। আরেক সিন্ডিকেটের সদস্য শিবলী নোমান জানান, জমি নির্ধারণের আগে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হলে আজ এই সংকট হতো না। প্রতিষ্ঠানটি রাজশাহীতে হচ্ছে। কিন্তু সিন্ডিকেটে রাজশাহীর কোনো জনপ্রতিনিধিকে রাখা হয়নি। রাজশাহীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটি এখন ভুল সিদ্ধান্তে ঝুলে গেল।

রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সব সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ বা ইনস্টিটিউট এবং অন্য কোন মেডিকেল প্রতিষ্ঠানসমূহ ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অধিভূক্তির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করেছে। সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরকার গত অর্থ বছরে রামেবি’র জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। মূল ক্যাম্পাসের জন্য রাজশাহী মহানগরীর বড়বনগ্রাম মৌজায় প্রায় ৮৫ দশমিক ৮০৭ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু গত দুই বছরেও জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়নি।

জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানান, ভূমির শ্রেণীর কারণে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বড়বনগ্রাম মৌজার জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে না। স্বাস্থ্য সচিব অন্যত্র জমি খুঁজতে বলেছেন। তবে এ ব্যাপারে কথা বলতে রামেবি’র উপাচার্য ডা. মাসুম হাবিবের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।