রবিবার , ৩১ জুলাই ২০১৬ | ১লা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

জঙ্গি ওস্তাদের নাম জাহাঙ্গীর!

Paris
জুলাই ৩১, ২০১৬ ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ঈদের দিন কিশোরগঞ্জে শোলাকিয়ার কাছে পুলিশের ওপর জঙ্গি হামলা চালাতে গিয়ে আটক হয়েছিলেন শফিউল। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, এক ওস্তাদের নির্দেশেই সে হামলার জন্য শোলাকিয়ায় গিয়েছিলেন তিনি। গোবিন্দগঞ্জের এক টিনশেড বাড়িতে তার প্রশিক্ষণ হয়েছে।

 

অনুসন্ধানে ওই ওস্তাদ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে। তার নাম জাহাঙ্গীর। গোবিন্দগঞ্জের সবাই তাকে দুর্ধর্ষ জঙ্গি জাহাঙ্গীর ওরফে মাসুদ ওরফে রাজীব নামেই জানে।

 

জাহাঙ্গীরের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার চরদাতিয়ায়। তার বাবা মরহুম মৌলভী ওসমান খুবই পরহেজগার এবং কামেল লোক ছিলেন। কিন্তু বাবার দ্বিতীয় বিয়ের পরেই জাহাঙ্গীররা ২ ভাই জেলার গোবিন্দগঞ্জে চলে যান। গোবিন্দগঞ্জের শিবপুর ইউনিয়নের ম‍ালঞ্চ গ্রামে বাড়ি করেন তারা। গোবিন্দগঞ্জ শহরে তাদের স্টিল ফার্নিচারের ব্যবসা আছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তিনি তার ভাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০০ সাল পরবর্তী সময়ে জাহাঙ্গীর জামায়াতুল মুজাহিদিন বা জেএমবিতে যোগ দেন। এই সময়ে তাকে ড. আসাদুল্লাহ গালিব ও সিদ্দিকুর রহমান বাংলাভাইয়ের সংস্পর্শে আসতে দেখা যায়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বাংলাভাই সম্পর্কে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হতে থাকলে তিনি ডুব মারেন। পরে গোবিন্দগঞ্জে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। এরপর নিজেকে মাসুদ নামে পরিচয় দিয়ে তিনি জেএমবি’র সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চালাতে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে গাইবান্ধার সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি, ফুলছড়ি এলাকায় তাকে রাজীব নামে সবাই চেনে। এলাকায় তার সংগঠন রাজীব বাহিনী নামে পরিচিত।

 

স্থানীয়দের মতে, জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন ধরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের মালঞ্চ গ্রামে বাড়ি করে আছেন। এ বাড়িতেই গত ৮ জুন রাতে জঙ্গি বিরোধী অভিযান চালায় পুলিশ। সেই অভিযানে অতর্কিত হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন বগুড়ার জেএমবি ক্যাডার তুহিন। এ সময় পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায় বলে প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন।

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, জেএমবি’র উত্তরাঞ্চলের প্রধান সদস্য সংগ্রহকারী হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীর। বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামে রয়েছে তার শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। এসব স্থান থেকে এ নেটওয়ার্ক সদস্য সংগ্রহ করে বগুড়া, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও জামালপুরের দুর্গম চরাঞ্চলে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠায়।

 

তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাহাঙ্গীরের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। যদিও গাইবান্ধা পুলিশের ধারণা, এরইমধ্যে জাহাঙ্গীর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের জালে আটকা পড়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে কেবল দুর্ধর্ষ জঙ্গিই নয়, গড়ে উঠেছে আত্মঘাতী নারী কমান্ডো বাহিনী। সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শিবপুর, কামারদহ, তালুক কানুপুর, নাকাই, কামদিয়া, শাখাহার, দরবস্তপুরে তার নেতৃত্বে জঙ্গি আস্তানা গড়ে উঠেছে।

 

স্থানীয়দের ধারণা, উত্তরবঙ্গসহ সারা দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, রংপুরে জাপানি নাগরিক খুনসহ সব জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সঙ্গে রয়েছেন জাহাঙ্গীর। শোলাকিয়ায় জঙ্গি শফিউল ওরফে শরিফুল ওরফে সোহান ওরফে মুত্তাকিল ধরা পড়ার পর থেকে একাধিকবার জাহাঙ্গীরের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা।

 

সাঘাটা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. স্বপন এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, সাঘাটার বারোকোনা বাজারের পাশে আসাদুল্লাহ গালিবের একটি মাদ্রাসা আছে। এই মাদ্রাসায় ঘাঁটি ছিল বাংলাভাইয়ের। জেএমবি’র উত্থানের সময় এই মাদ্রাসার মাধ্যমেই এই এলাকার যুবকদের জেএমবি’র সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো।

 

বাংলা ভাইয়ের বাড়ি পার্শ্ববর্তী জেলায় ও তার শ্বশুরবাড়ী সাঘাটায় হওয়ায় সবাই তাকে আলাদা বিশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করতো। সেই সময়েই চকদিয়া গ্রামের ইউনুস আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে কাজ করতো। আর বোনারপাড়ার রাঘবপুর, ভূতমারায় কিছু জেএমবি’র উত্থান ঘটে।

 

বর্তমানে সাঘাটার জুমারবাড়ি, কামালের পাড়া, হলদিয়া ইউনিয়ন, চর সাঘাটা ইউনিয়ন, বোনারপাড়া, রাঘবপুর, সারভিটা, কচুয়া ইউনিয়নের বুড়িঙ্গি পাঠানপাড়া ও পরমিশর ইউনিয়নের চকদাতিয়ায় জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বাধীন জঙ্গিদের ঘাঁটি আছে বলে স্থানীয়রা জানান।

সূত্র: বাংলা নিউজ

সর্বশেষ - অপরাধ ও দুর্নীতি