১৬০ কোটি টাকা আত্মসাৎ

ছেলেসহ বাবুল চিশতীর ১২, স্ত্রীর ৫ বছরের কারাদণ্ড

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

ফারমার্স ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ব্যাংকটির অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী ও তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতীর ১২ বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

একই সঙ্গে বাবুল চিশতীর স্ত্রী রোজী চিশতি ও ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসুদুর রহমান খানকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বাবুল চিশতি, তার স্ত্রী ও ছেলের ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকার দ্বিগুণ ৩১৯ কোটি ৯০ লাখ ৯৯ হাজার ২৪০ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। যা অনাদায়ে বাবুল চিশতী ও রাশেদুল চিশতীকে দুই বছর এবং রোজী চিশতীকে এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আর তাদের সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।

এ ছাড়া অপর আসামি মাসুদুর রহমান খানকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। যা অনাদায়ে তার আরও এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। তারও সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রায় ঘোষণার আগে বাবুল চিশতীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রাশেদুল হক জামিনে থেকে আদালতে হাজির হন। তবে রোজি চিশতী ও মাসুদুর রহমান এদিন আদালতে হাজির হননি। আদালত জামিন বাতিল করে তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। রায়ের পর বাবুল চিশতী ও রাশেদুল হককে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে গত ৫ অক্টোবর দুদক এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।

২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর বাবুল চিশতীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। পরবর্তী সময়ে মামলায় দুদকের পক্ষে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। প্রায় ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল গুলশান থানায় মামলা করে দুদক।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ব্যাংকের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাহবুবুল হক চিশতী গুলশান শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব খুলে বিপুল পরিমাণ অর্থ নগদে ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা ও উত্তোলন করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়েদের ও তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন শাখার মোট ২৫টি হিসাবে বেশির ভাগ অর্থ নগদ ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে মোট ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেন।

হিসাবগুলোতে গ্রাহকদের হিসাব থেকে পাঠানো অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও লেয়ারিং এর মাধ্যমে গ্রহণ করে এবং নিজেদের নামে ক্রয়কৃত ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিল্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন। মান্ডি লন্ডারিং আইনের সর্বোাচ্চ ১২ বছরের কারাদণ্ডসহ জরিমানাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

উল্লেখ্য, বাবুল চিশতীসহ পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে ঋণ কেলেংকারির অন্তত অর্ধডজন মামলা করে দুদক। ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল রাজধানীর গুলশান থানার একটি অর্থ পাচারের মামলায় দুদকের উপপরিচালক মো. সামছুল আলমের নেতৃত্বাধীন একটি দল রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে বাবুল চিশিতীকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।