ছুরি নিয়ে আক্রমণ করেছিল জঙ্গি করিমের কিশোর ছেলেও!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রাজধানীর আজিমপুরে জঙ্গিদের আস্তানায় অভিযান চালানোর সময় নিহত জঙ্গি তানভীর কাদেরী ওরফে আব্দুল করিমের ১৪ বছর বয়সী ছেলে পুলিশের ওপর ছুরি হাতে আক্রমণ করেছিল।এই অভিযানের ঘটনায় রবিবার রাতে লালবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় করিমের ছেলে তাহরীম কাদেরী ওরফে রাসেলকে ৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে।জঙ্গি আস্তানা থেকে আটকের পর বর্তমানে সে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের হেফাজতে রয়েছে।

আজিমপুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বলা হয়েছে, পুলিশ ওই জঙ্গি আস্তানার দরজা ঠেলে ভেতরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাহরীম কাদেরী ওরফে রাসেল পুলিশের ওপর ছুরি হাতে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।তবে পুলিশ তাকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

এজাহারে বলা হয়, বাসার ভেতরে ঢোকার পর একটি কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়।এমতাবস্থায় পরিস্থিতি ঝুকিপূর্ণ মনে হওয়ায় সোয়াট টিমকে খবর দেওয়া হয়। সোয়াট টিমের সদস্যরা ওই কক্ষের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং আট বছর বয়সী জুনায়ারা ওরফে পিংকি এবং এক বছর বয়সী সাবিহা জামান নামে দু’শিশুকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠান।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, তাহরীম কাদেরী কেন তাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল এবং সে প্রকৃতই বাবা-মায়ের মতো জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছে কি না, তা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে। সূত্র জানায়, তাহরীমের একটি জমজ ভাই রয়েছে। তবে ওই জঙ্গি আস্তানায় তাকে পাওয়া যায়নি।পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাহরীমের ওই জমজ ভাইকে ‘জিহাদে’র পথে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সিটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। সে এখন কোথায় আছে তা জানার চেষ্টা চলছে।

তদন্ত সূত্র জানায়, তাহরীম ধানমণ্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের লেভেল ‘এইট’ -এর ছাত্র ছিল। তবে সে গত কয়েক মাস ধরে স্কুলে অনিয়মিত ছিল। বাবা-মা দু’জনই জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার কারণে জমজ দুই ছেলেকেও মোটিভেট করে জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য,গত শনিবার রাতে লালবাগ থানাধীন আজিমপুরের ২০৯/৫  পিলখানা রোডের একটি ছয় তলা আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পরে ওই বাসা থেকে এক জঙ্গির মৃতদেহ,আহত তিন নারী জঙ্গি ও নিহত জঙ্গি করিমের ১৪ বছর বয়সী ছেলে তাহরীমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযানের সময় দু’নারী জঙ্গি ও এক পুরুষ জঙ্গি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। পুরুষ জঙ্গি সফল হলেও অপর দু’নারী জঙ্গিকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে ওই বাসায় নক করার সঙ্গে সঙ্গেই প্রথমেই পুলিশকে লক্ষ্য করে মরিচের গুড়া ও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে আরেক নারী জঙ্গি। পরে সাধারণ মানুষের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন