ছুটি বাড়লে পাঠদান সহায়ক হিসেবে যুক্ত হবে কমিউনিটি রেডিও

পাহাড়ি এলাকা, চরাঞ্চল ও হাওরসহ দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান অব্যাহত রাখতে কমিউনিটি রেডিও’র মাধ্যমে পাঠদানের চিন্তা-ভাবনা করছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। করোনা পরিস্থিতি শিগগিরই স্বাভাবিক না হলে দ্রুত এই ব্যবস্থায় যাবে সরকার।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা রেডিও কানেক্টিভিটি ব্যবহারের কথা চিন্ত-ভাবনা করছি। কমিউনিটি রেডিও’র মাধ্যমে করা যায় কিনা, সেটা নিয়ে কাজ করছি। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি শুরু হয়। টানা এই ছুটি চলবে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত।  দীর্ঘ এই ছুটিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সংসদ টিভিতে ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ শিরোনামে ভিডিও ক্লাস প্রদর্শন করা হচ্ছে। পাশাপাশি ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ শিরোনামে ইউটিউব চ্যানেলে এবং শিক্ষা বাতায়নে ভিডিও ক্লাস আপলোড করা হচ্ছে। এছাড়া, রাজধানীর বেসরকারি বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভার্চুয়াল ক্লাস নিচ্ছে পাঠদান চালু রাখতে।

এসব পদক্ষেপের পরও পাহাড়ি এলাকা, চরাঞ্চল ও হাওরসহ দুর্গম এলাকার স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ পাঠদানে অংশ নিতে পারছে না। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে পদক্ষেপ নিচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে মূল্যায়ন করেছি। বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং। তবে সর্বোচ্চ কতটুকু জায়গায় আমাদের বর্তমান কার্যক্রম নিতে পারি, তার চেষ্টা করছি। আমাদের টার্গেট সবটাই নেওয়া সে লক্ষ্যে পথ বের করছি, আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। এছাড়া, অনেকগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করছি। আমাদের বেশিরভাগ জায়গায় মোবাইল কানেক্টিভিটি রয়েছে। যদিও সবার স্মার্টফোন নেই। তবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কীভাবে সব শিক্ষার্থীদেরকে এর আওতায় আনা যায়, সে চেষ্টা করছি।’

অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি এলাকা, চরাঞ্চল ও হাওরসহ দুর্গম এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের আওতায় আনতে চেষ্টা হচ্ছে। পাশাপাশি কমিউনিটি রেডিও’র মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রমের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি কমিয়ে এবং ক্লাস বাড়িয়ে  ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সূত্র বলছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষ চালিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আর পরবর্তী শিক্ষা বছরের দুই মাস সমন্বয় করতে ছুটি কমিয়ে আনারও প্রস্তাব করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘করোনার কারণে যদি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে, সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাব ছিল সিলেবাস না কমিয়ে শিক্ষাবর্ষ  ফেরুয়ারি পর্যন্ত করা। মার্চ থেকে যদি ২০২১ সেশন শুরু করি এবং ছুটি কমিয়ে দেই, তাহলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে না।’ তবে এ বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান এনসিটির চেয়ারম্যান। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন