ছাঁদের ২’শ ভেতরে সাড়ে ৪’শ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘ডাইরেক ঢাকা। আসেন আসেন সময় হয়ে গেছে। ছেড়ে দেব, চলে গেলে পাবে না। ছিট খালি আছে। আসেন আসেন ভেতরে সাড়ে ৪’শ। ছাঁদে ২’শ।’

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহীর বাসস্টান্ডে বাসের এক হেলপার এমনটি বলছিলেন।

‘গরীবের আবার ঈদ আছে নাকি। ঈদ আসলে নতুন করে ধার দেনায় পড়তে হয়। যে টাকা বেতন পাই তা দিয়ে কোন মতে চলে যায়। তার পরে বড় বাবুরা ঠিক মত বেতন দিতে দিতে চাই না। এই টাকা আছে এই নেই এর মধ্যে বাড়িতে ঈদ করতে আসা। ভালো গাড়িতে যে তো অনেক টাকা লাগবে।’

শনিবার সকালে বাসস্টান্ডে বাসের ছাঁদে বসে নিজের কষ্টের মধ্যে আনন্দের ঈদ পালনের কথা বল্লেন রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার রইসুল ইসলামের স্ত্রী জান্নাত বেগম।

14292498_1088659827855125_6672505708312473028_n

‘আমরা দুই মানুষ ঢাকায় একটা কম্পানীতে জব (চাকরি) করি। সেখান থেকে যে টাকা পাই তাতে কোন মতে চলে যায়। ছেলে আবদুর রাজ্জাক (৫) ও মেয়ে সাবরিনর (৭)। তাদের জামা কাপড় কিনতেই আর গাড়ি ভাড়ার টাকা ম্যানেজ (জোগার) করতেই সব শেষ।’

‘বছরে মাত্র দুইটা দিনই তো বাড়িতে বাবা মা তাকিয়ে থাকে। কবে ঈদ আসবে আর আমরা বাড়ি যাব এই জন্য পথ চেয়ে থাকে বাবা মা। তার পের সেমাই ঈদে আসতে পারি নি। তাই বাবা রাগ করেছিল।’

যাত্রী রইসুল ইসলাম বলেন,‘ বছরে তো এক বা দুই দিন আসতে হয় নিজের বাড়িতে অতিথি হয়ে। এখন কি করবো আবার যেতেই হব। না গেলে আবার বেতন কেটে নিবে। ভালো গাড়িতে যে বেশি টাকা লাগেব।’

14322585_1088659697855138_1308720223485197755_n

তিনি আরো বলেন, ‘ভালো গাড়িতে গেলে একজনের যে ভাড়া লাগবে তাকে আমারা সবাই বাড়িতে চলে যেতে পারবো। তাছাড় সব গাড়ির তো টিকিট নাকি বিক্রি হয়ে গেছে। যেতেই হবে কোন উপাই না।’

বাসের ছাঁদে যাত্রায় জীবনের ঝুঁকি আছে এমন কথায় তিনি বলেন, অনেকেই তো যাচ্ছে। কিছু হবে না। আল্লাহ ভরসা।

 

স/আ