এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ সিআরপিএফ-এর ৭৪ ব্যাটালিয়নের রোড ওপেনিং পার্টিটি হামলার মুখে পড়ে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। উপদ্রুত এলাকা দক্ষিণ বস্তারের সবচেয়ে বিপজ্জনক অঞ্চল বুরকাপাল-চিন্তাগুফা এলাকায় হামলাটি হয়। বুরকাপাল এবং চিন্তাগুফার মাঝে একটি রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। সেই নির্মীয়মান রাস্তাটির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই সিআরপিএফের ৯০ জনের দলটিকে ওই এলাকায় পাঠানো হয়েছিল বলে খবর।

 

শেখ মহম্মদ নামে এক সিআরপিএফ জওয়ান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রায় ৩০০ মাওবাদীর একটি বিশাল দল জঙ্গলে গা ঢাকা দিয়ে ছিল। সিআরপিএফ-এর দলটি বুরকাপালে পৌঁছতেই চার দিক দিয়ে ঘিরে ধরে মাওবাদীরা গুলি চালাতে শুরু করে। হামলাকারীদের হাতে ইনস্যাস, একে-৪৭, লাইট মেশিন গান, অটোম্যাটিক রাইফেলের মতো অস্ত্রশস্ত্র ছিল বলে ওই সিআরপিএফ জওয়ান জানিয়েছেন। মাওবাদীরা প্রথমে গ্রামবাসীদের সামনে ঠেলে দিয়ে মানব-ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিল বলে শেখ মহম্মদ জানিয়েছেন। ফলে সিআরপিএফ জওয়ানরা প্রথমেই গুলি চালাতে পারেননি। পরে অবশ্য বাহিনী পাল্টা জবাব দেয়। সেই প্রত্যাঘাতে বেশ কয়েক জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে বলেও সিআরপিএফ সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

 

ছত্তীসগঢ় পুলিশ সূত্রের খবর, বুরকাপালে কোবরা বাহিনী পাঠানো হয়েছে। ডিজি এএন উপাধ্যায় জানিয়েছেন, বুরাকাপালে অন্তত ৩ ঘণ্টা গুলির লড়াই চলেছে। এলাকায় এখন চিরুনি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে দন্তেওয়াড়া রেঞ্জের ডিআইজি সুন্দররাজ পি জানিয়েছেন, ‘‘অন্তত ২৬ জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন।’’ ৬ জন জওয়ানকে গুরুতর জখম অবস্থায় রায়পুরের রামকৃষ্ণ হাসপাতাল এবং বালাজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে খবর।

 

মাওবাদী হামলার খবর পেয়েই বুরকাপালের কাছাকাছি অবস্থিত সিআরপিএফ ক্যাম্পগুলি থেকে দ্রুত ঘটনাস্থলের দিকে পাঠানো হয় অতিরিক্ত বাহিনী। ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ এই ভয়াবহ মাওবাদী হামলার প্রেক্ষিতে জরুরি বৈঠক ডাকেন। ছত্তীসগঢ়ের রাজ্যপালও গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার পরিস্থিতির পুঙ্খানুপুঙ্খ খবর রাখছে। চলতি বছরে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার বড়সড় মাওবাদী হামলার মুখে পড়ল ছত্তীসগঢ়। এ বছরের গোড়ার দিকে এই সুকমাতেই মাওবাদী হামলায় ১২ জওয়ানের প্রাণ গিয়েছিল।