চ্যাম্পিয়ন কিংসের সামনে সাইফ

পল পুট তুলনা টানলেন ফেরারির সঙ্গে টয়োটার। তাঁর দল সাইফ স্পোর্টিং টয়োটা আর বসুন্ধরা কিংস হলো ফেরারি। কিংসকে ফেরারি মানতে আপত্তি থাকার কথা নয় কারো। শীর্ষ ফুটবলে আসার পর ফাইনাল ছাড়া কোনো টুর্নামেন্ট খেলেনি তারা। একবার বাদে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্রতিবারই। সেখানে এটাই প্রথম ফাইনাল সাইফের।

দুই দলের কাঠামোগত মিল আছে। ঢাকার ফুটবলে সমর্থক বা এলাকাভিত্তিক ক্লাব সংস্কৃতিকে যোগ করেছে করপোরেট চাকচিক্য। কিন্তু কিংস যেখানে শুরু থেকে সফল, সেখানে সাইফ এখনো শীর্ষ ছোঁয়ার রাস্তাটা খুঁজে পায়নি। আজ ফেডারেশন কাপে সেই শীর্ষ ছোঁয়ার লড়াই তাদের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরার বিপক্ষে। সাইফের জন্য কাজটি ভীষণ কঠিন, কারণ কিংস সেই প্রথম সময়ের মতোই ক্ষুধার্ত এখনো। তৃতীয় মৌসুমে এসেও কেবল নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে তারা। দানিয়েল কলিনদ্রেস, হার্নান বার্কোস, বখতিয়ার দুশোবেকভের মতো খেলোয়াড়কে ছেড়ে আরো কার্যকর খেলোয়াড় খোঁজে দলটি। এই মৌসুমের ফেডারেশন কাপে জোনাথন ফার্নান্দেজ, রোবিনহো, রাউল বেতেরাদের সেই কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে প্রতি ম্যাচে। শুরুতে নজর কেড়েছিলেন রোবিনহো। একটু ম্লান মনে হয়েছিল স্ট্রাইকার রাউলকে। পরে দেখা গেল সেই রাউল টানা গোল করে চলেছেন। খেলা আরো গড়াতে ফুটে উঠল বক্স টু বক্স মিডফিল্ডার ফার্নান্দেজের কার্যকারিতা। সঙ্গে মাশুক মিয়া, মতিন মিয়া, ইব্রাহিমদের মতো স্থানীয় অন্যতম সেরা ফুটবলাররা তো আছেনই। এই দলকে ‘ফেরারি’ না মেনে উপায় কী!

তবু আজ ফাইনালের মঞ্চে সাইফ তাদের সঙ্গে একই সমতলে। কখনো সেমিফাইনালে না ওঠা দলটি এবার ফাইনালে উঠেছে আত্মবিশ্বাসী ফুটবল খেলে। কিংস অধিনায়ক তপু বর্মণের মতে, ‘সাইফের ফুটবলাররা একসঙ্গে অনেক দিন ধরে খেলছেন। তারুণ্যনির্ভর দল হয়েও এখন তাই তারা অনেক পরিণত এবং নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটাও ভালো।’ কিংসেও সেই বোঝাপড়ার কমতি আছে বলা যাবে না, অন্য যেকোনো দলের তুলনায় তাদের প্রস্তুতি যে বেশি। গভীরতা বেশি স্কোয়াডেও। ম্যাচ পরিস্থিতিতে ব্রুজোন তাই খেলোয়াড় বদলে, ফরমেশন বদলে করতে পারেন অনেক কিছুই। সাইফ এই টুর্নামেন্টের শুরু থেকে খেলছে গতিময় ফুটবল। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে দ্রুত আক্রমণে ওঠায় তাদের জুড়ি মেলা ভার। নাইজেরীয় কেনেথ ইকেচুকুর পায়ে গোল আছে।

ব্রুজোনের মতে, ‘দলটির খেলোয়াড়রা শারীরিকভাবে শক্তিশালী এবং দ্রুতগতির হওয়ায় সেই আক্রমণগুলো ভীতি ছড়ায় প্রতিপক্ষের অর্ধে। তবে ওদের শক্তিশালী দিকের পাশাপাশি দুর্বলতাও আছে। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’ প্রতি-আক্রমণ নয় বরং প্রতিপক্ষের অর্ধে গিয়ে আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেওয়া কিংসের খেলার ধরন। সাইফ তা কিভাবে সামলায় আজ দেখার আছে সেটিও।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ