চেলসির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পেছনে নায়ক এক ভারতীয়!

ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে চেলসি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগে কখনোই জালের দেখা না পাওয়া কাই হাভার্টজের একমাত্র গোলে ইউরোপ সেরার ট্রফি জিতেছে টমাস টুখেলের দল। তবে এই জয়ের পেছনে অবদান রয়েছে এক ভারতীয়েরও। তিনি, কেরালার বিনয় মেনন।

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, চেলসির ওয়েলনেস কনসালট্যান্ট ও মাইন্ড স্ট্র্যাটেজিস্ট (ফুটবলারদের মানসিক ভাবে শক্তিশালী করা) পদে কাজ করেন মেনন। ক্রীড়া মনস্তত্ত্ব নিয়ে এম ফিল করার পরে কোচি থেকে তিনি হৃষীকেশে গিয়েছিলেন চাকরি করতে। দুবাইয়েও কাজ করেছেন বিনয়। সেখান থেকেই ইংল্যান্ডে চলে যান। চেলসির মালিক রোমান আব্রামোভিচের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরামর্শদাতা ছিলেন বিনয়। পরে রোমানই চেলসিতে নিয়ে যান তাঁকে।

ফুটবলের সঙ্গে তার আগে বিনয়ের কোনও সম্পর্ক ছিল না। শৈশবে জুডো শিখেছিলেন। কেরালার হয়ে রাজ্যস্তরে প্রতিনিধিত্বও করেছেন। পরবর্তীকালে যোগ ব্যায়াম নিয়ে কাজ শুরু করেন বিনয়। তাঁর পরামর্শেই মানসিকভাবে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন এনগোলো কতেঁ, টিমো ওয়ের্নার, কাই হাভার্টজরা।

kalerkantho

এদিকে ৯ বছর পরে চেলসির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের অন্যতম নায়ক, একমাত্র গোলদাতা উচ্ছ্বসিত হাভার্টজ বিস্ময়ের ঘোর এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তিনি বলেছেন, “জানি না কী বলব। এই মুহূর্তটাকে সত্যি করতে ১৫ বছর ধরে পরিশ্রম করেছি।”

হাভার্টজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ চেলসির অধিনায়ক সেসার আথপিলিকোয়েতা। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “হাভার্টজ সেরা মানসিকতা নিয়ে ফুটবলটা খেলে। আমি নিশ্চিত, এই ছেলেটা একদিন মহানায়ক হয়ে উঠবে।” চেলসি অধিনায়ক যোগ করেছেন, “আমি এই ক্লাবে খেলতে এসেছিলাম ২০১২-তে। চেয়েছিলাম, আর একবার অন্তত আমার প্রিয় ক্লাবকে ইউরোপ-সেরা করতে। তাই আজকের দিনটা ভুলতে পারব না।”

ফাইনালে একমাত্র গোলটি হাভার্টজ করলেও ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন এনগোলো কঁতে। তিনি বলেন, “এত আনন্দ কখনও পাইনি। ক্লাবকে ইউরোপ সেরা করতে পেরে আমি গর্বিত। পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে বিস্ময়কর। গোটা মওসুম জুড়ে কঠোর পরিশ্রমের ফল আজ হাতেনাতে পেলাম। অবশ্য এখানে আমার একার কোনও কৃতিত্ব নেই। সবকিছুই হয়েছে দলগত ভাবে। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে যন্ত্রণা সহ্য করেছি। একসঙ্গে লড়াই করেছি। যার পুরস্কার হচ্ছে এই জয়।”

২০১৮-তে বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্স দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন কঁতে। পরের বছর চেলসির ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রেও মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। চেলসির এই সাফল্যের অনেকটা কৃতিত্বই কঁতে দিচ্ছেন নতুন কোচ টোমাস টুখেলকে। গত জানুয়ারিতে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে সরিয়ে এই জার্মানের হাতে ক্লাবের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন রোমান আব্রামোভিচ।

টুখেলের প্রশংসা করে কঁতে বলেছেন, “নতুন ম্যানেজার এসেই আমাদের খেলার ধরন পুরোপুরি বদলে দেন। তাই ফুটবলারদের মতোই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব টমাসেরও।”

চেলসি কোচ বলেছেন, “সত্যি কথা বলতে, এমন কোনও কাজ নেই যা ম্যাচে কঁতে করেনি। অক্লান্ত পরিশ্রম করে যায় কঁতে। ম্যান সিটি ফুটবলারদের কাছ থেকে আজ কত বার যে বল কেড়ে নিয়েছে, হিসাবও রাখতে পারিনি। আমি যখন যে ক্লাবে কোচিং করিয়েছি, সেখানেই কঁতে-কে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি ভাগ্যবান, শেষপর্যন্ত চেলসিতে ওকে পেলাম।”

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ